রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

|২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৫৬, ১৯ জুলাই ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছিল: ট্রাম্প

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছিল: ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাতে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছিল। হোয়াইট হাউজে এক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেন, “বিমানগুলো আকাশেই গুলি করে নামানো হয়েছিল। পাঁচটি, হ্যাঁ, চার কিংবা পাঁচটি। তবে আমার ধারণা, আসলে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে।” তিনি অবশ্য কোন দেশের কতটি বিমান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

এ সংঘাত শুরু হয়েছিল এপ্রিলে, যখন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ইসলামপন্থি জঙ্গিদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এর জবাবে ভারত পাকিস্তানের ভেতরে ‘জঙ্গি ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। এরপর উভয় দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলে এবং অবশেষে মে মাসে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা আকাশযুদ্ধে ভারতের পাঁচটি বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে ভারতও পাকিস্তানের কিছু যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে। ইসলামাবাদ অবশ্য বিমান হারানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে স্বীকার করেছে যে তাদের একাধিক বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভারতের শীর্ষ জেনারেলদের ভাষ্য অনুযায়ী, সংঘাতের শুরুর দিকে কিছু ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়লেও পরে কৌশল পরিবর্তনের মাধ্যমে তারা ভালো অবস্থানে ফিরে আসে। অস্ত্রবিরতির আগে তিনদিনের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়।

ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, এ অস্ত্রবিরতি তার মধ্যস্থতায় হয়েছে। তিনি ১০ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেন। তবে ভারত বরাবরই দাবি করে আসছে, এই বিরতি কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় নয়, বরং ভারত-পাকিস্তান নিজেদের আলোচনার মাধ্যমেই তা অর্জন করেছে।

নয়া দিল্লির অবস্থান হলো কাশ্মীরসহ সব দ্বিপাক্ষিক বিরোধ ভারতের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই মীমাংসা হবে, বাইরের কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপ তারা গ্রহণযোগ্য মনে করে না।

দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কের দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জটিল। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠ মিত্র, অন্যদিকে চীনের প্রভাব প্রতিরোধে ভারত ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হয়ে উঠছে।

এপ্রিলে কাশ্মীরে যে জঙ্গি হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিহত হন, তার দায় ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দেওয়া হলেও ইসলামাবাদ সে অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। ওয়াশিংটন হামলার নিন্দা জানালেও সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেনি। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র “দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” (টিআরএফ)–কে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যেটি ভারতের দাবি অনুযায়ী লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা এবং এপ্রিলের ওই হামলার জন্য দায়ী।

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সাম্প্রতিক এই উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক কৌশলগত শক্তিগুলোর নজরও বাড়ছে।