গোপন বৈঠকে জড়িত থাকার অভিযোগে সুমাইয়া জাফরিন গ্রেপ্তার

রাজধানীর ভাটারা এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে গোপন রাজনৈতিক বৈঠকে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সুমাইয়া জাফরিন নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, "ভাটারায় গোপন বৈঠকের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় সুমাইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ডিবির হেফাজতে আছেন।"
সূত্র জানায়, গত ৮ জুলাই ভাটারার একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় এক গোপন বৈঠক, যেখানে সরকার পতনের পরিকল্পনায় জড়ো করা হয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রায় ৪০০ জন ক্যাডারকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কথিত 'প্রশিক্ষণ কর্মশালা'। এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারতের পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য ‘নৈরাজ্য সৃষ্টির ছক’ আঁকা হয়েছিল বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি।
ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর, জুলাইয়ের শেষ দিকে বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে দেশজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এরই ধারাবাহিকতায়, ১২ জুলাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেত্রী শামীমা নাসরিন শম্পা, বরগুনার যুবলীগ নেতা সোহেল রানা, এবং মেহেরপুরের যুবলীগ আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে সেনাবাহিনীর মেজর সাদেকুল হক এই গোপন আয়োজনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। সুমাইয়া জাফরিন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বৈঠকটি সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
প্রথম দিকে সুমাইয়াকে মেজর সাদেকের স্ত্রী এবং পুলিশের সহকারী সুপার (এএসপি) হিসেবে পরিচয় দেওয়া হলেও পরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, "এই নামে পুলিশের কোনো নারী কর্মকর্তা নেই।"
এদিকে, গোপন বৈঠকের ঘটনায় মেজর সাদেকুল হককে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।