বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

|২১ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ৫ আগস্ট ২০২৫

হাইতিতে তীব্র গোলাগুলি, মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিত

হাইতিতে তীব্র গোলাগুলি, মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিত
ছবি: সংগৃহীত

হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে তীব্র গোলাগুলির ঘটনায় দেশটিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সাময়িকভাবে কার্যক্রম স্থগিত করেছে। স্থানীয় সময় সোমবার (৪ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, দূতাবাস কর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কূটনৈতিক চত্বরেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে, এবং তাদের বাইরে যাতায়াত পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। খবর দ্য ব্রাসেলস টাইমস।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (Twitter)-এ এক সতর্কবার্তায় জানায়, দূতাবাসের কাছাকাছি তাবারে এলাকায় চলছে টানা গুলি বিনিময়, যা বেশ বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্থানীয়দের ওই এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, আর সব ধরনের সরকারি সফর স্থগিত করা হয়েছে।

তাবারে এলাকা পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর-পূর্ব অংশে, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিকটে অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই সেখানে পুলিশ ও সশস্ত্র গ্যাংয়ের মধ্যে গোলাগুলি চলছে। হাইতির রাজধানী ও আশপাশের বড় একটি অংশ ২০২৪ সাল থেকে গ্যাং নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সাবেক সেনেটর গ্রেপ্তার
এর আগে শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর উপশহর পেতিওন-ভিলে একটি রেস্তোরাঁ থেকে সাবেক সেনেটর নেনেল ক্যাসিকে গ্রেপ্তার করেছে হাইতি ন্যাশনাল পুলিশ (PNH)। তিনি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পলাতক ছিলেন।

তার বিরুদ্ধে রয়েছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অর্থায়ন, হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা এবং অপরাধ চক্রে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগ।

রক্তাক্ত বাস্তবতা ও অপহরণ
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের জুলাই মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে (১ জানুয়ারি–৩০ জুন) হাইতিতে অন্তত ৩,১৪১ জন নিহত হয়েছেন। সহিংসতা, অপহরণ ও গ্যাং-নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাস প্রতিদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিক সহিংসতার মধ্যে, রোববার রাতে রাজধানীর একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে ৯ জনকে অপহরণ করা হয়, যাদের মধ্যে আছেন আয়ারল্যান্ডের এক মিশনারি ও তিন বছরের একটি প্রতিবন্ধী শিশু।

অপহরণের ঘটনায় মানবিক সংগঠন ‘নস পেতি ফ্রের এ স্যুর’ এবং খ্রিস্টান সংগঠন ‘লা ফঁদাসিও স্যাঁ লুক’ যৌথভাবে তাদের সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে। তারা অপহৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

মুক্তিপণ নিয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি
এখনো পর্যন্ত অপহরণকারীরা কোনো মুক্তিপণ বা শর্ত জানায়নি। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, চলমান পরিস্থিতি হাইতির জন্য আরও বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ দুর্বল এবং অপরাধী গ্যাংগুলো দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে।