বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

|২১ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ৩১ জুলাই ২০২৫

সাড়ে তিন বছর পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার

সাড়ে তিন বছর পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর পর মিয়ানমারে জারি করা জরুরি অবস্থা বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা সরকার। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জান্তা মুখপাত্র।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার একটি লিখিত আদেশে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এরপর বৃহস্পতিবার এক অডিও বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন জান্তার মুখপাত্র জৌ মিন তুন। তিনি বলেন, “বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার স্বার্থে সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে লক্ষ্যে আজ থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলো।”

মিন অং হ্লেইং এর পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বর কিংবা ২০২৬ সালের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। তবে সর্বশেষ অডিও বার্তায় জান্তা মুখপাত্র বলেছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যেই নির্বাচন হবে। যদিও এখনও নির্দিষ্ট ভোটগ্রহণের তারিখ জানানো হয়নি।

মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করে এবং গণতন্ত্রপন্থি অং সান সুচির এনএলডি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে।

এরপরই দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয় এবং শুরু হয় গণতন্ত্রপন্থি নেতাদের ধরপাকড়। অং সান সুচিসহ দলের শীর্ষ নেতারা এখনও কারাগারে বন্দি। গত বছর এনএলডির নিবন্ধন বাতিল করা হয়, ফলে দলটি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না।

নতুন নির্বাচনে জেনারেল মিন অং হ্লেইং প্রার্থী হবেন কি না— এ নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানায়নি জান্তা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, তিনি সরাসরি প্রার্থী না হলেও এমন কোনো কাঠামো তৈরি করতে পারেন, যেখানে নির্বাচনের পরও প্রকৃত ক্ষমতা তাঁর কাছেই থাকবে।

গত বুধবার রাজধানী নেইপিদোতে এক অনুষ্ঠানে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে প্রথম অধ্যায় শেষ করেছি। এখন দ্বিতীয় অধ্যায়ে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেই অধ্যায়ে যাওয়ার প্রবেশপথ হলো নির্বাচন। আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে।”

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে দীর্ঘ সেনাশাসনের একটি অধ্যায়ের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটল বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদিও প্রকৃত অর্থে কতটা গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ রয়েছে।

সূত্র: এএফপি

সম্পর্কিত বিষয়: