শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

|৭ কার্তিক ১৪৩২

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

সাপ্লাই লাইন চালু না হতেই উধাও তিন শতাধিক পানির মিটার

সাপ্লাই লাইন চালু না হতেই উধাও তিন শতাধিক পানির মিটার
ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌরসভায় নতুন পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগেই চুরি হয়ে গেছে তিন শতাধিক পানির মিটার। গত এক মাস ধরে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে ধারাবাহিকভাবে এসব চুরির ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এতে পৌরবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও উদ্বেগ।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, নিরাপদ পানি সরবরাহ ও উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ৩০ পৌরসভায় 'পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪ সালে পাঁচবিবি পৌরসভায় ২ হাজার ৬১৭টি পানির মিটার স্থাপন করা হয়, যার মোট ব্যয় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা।

রিডিং নেওয়ার সুবিধার্থে অধিকাংশ মিটারই বাড়ির বাইরে স্থাপন করা হয়। কিন্তু বাইরে স্থাপন করায় চোরদের জন্য এগুলো সহজ টার্গেটে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

স্থ্যানীয় এক বাসিন্দা বলেন, 'আমার পানির মিটারটি গেটের বাইরে ছিল। গতরাতে দেখি সেটা নেই। বাইরে মিটার বসানোটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। এতে চোরেরা সহজেই খুলে নিয়ে যাচ্ছে।'

পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে নয়টি ওয়ার্ডে মোট ৩৫০টি মিটার চুরি হয়েছে। এর মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ২৫টি, ২নং ওয়ার্ডে ৩০টি, ৩নং ওয়ার্ডে ৬৭টি, ৪নং ওয়ার্ডে ৩৮টি, ৫নং ওয়ার্ডে ৫০টি, ৬নং ওয়ার্ডে ২৭টি, ৭নং ওয়ার্ডে ৩০টি, ৮নং ওয়ার্ডে ৩২টি এবং ৯নং ওয়ার্ডে ৫১টি মিটার চুরি হয়েছে।

পৌরসভার কর্মচারী জিল্লুর রহমান বলেন, 'প্রতিদিনই মিটার চুরির খবর আসছে। অনেক জায়গায় এখন রিডিং নেওয়াই সম্ভব হচ্ছে না। আমরা ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে কাজ করছি।'

পৌরসভার সাব-সহকারী প্রকৌশলী মারুফ হোসেন জানান, প্রতিটি মিটারের দাম প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। এসব মিটার সাধারণ বাজারে বিক্রি হয় না, তবে ধারণা করা হচ্ছে ভাঙারির দোকানে বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।

পাঁচবিবি থানার ওসি নিয়ামুল হক বলেন, 'চুরির বিষয়ে আমরা অবগত আছি। টহল জোরদার করা হয়েছে, রাতের বেলা পাড়ায় পাড়ায় ডিউটির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, নেশাগ্রস্ত কিছু ব্যক্তি এসব চুরির সঙ্গে জড়িত।'

স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পৌরসভার নতুন পানি সরবরাহ প্রকল্প শুরু হওয়ার আগেই ব্যাহত হতে পারে পুরো উদ্যোগটি।

সদ্য সংবাদ/এমটি