শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

|৭ কার্তিক ১৪৩২

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ১৯:৪৬, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৯:৪৮, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

‎‘আর্ন এন্ড লিভ’ থেকে ঘর পেলেন অসহায় কছিরন বেওয়া

‎‘আর্ন এন্ড লিভ’ থেকে ঘর পেলেন অসহায় কছিরন বেওয়া
ছবি: সংগৃহীত

‎মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ‘আর্ন এন্ড লিভ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাগদাহ গ্রামের অসহায় কছিরন বেওয়ার জন্য বসতঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সংগঠনটি।

‎বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে ঘর নির্মাণ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে তা বুঝিয়ে দেওয়া হয় কছিরন বেওয়াকে। নতুন ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তিনি।

কছিরন বেওয়া ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাগদাহ গ্রামের বাসিন্দা। জানা যায়, তিনি বহুদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ভিক্ষা করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন কছিরন। দু’মুঠো ভাতের জন্য প্রতিদিনই হাত পাততে হতো মানুষের দ্বারে দ্বারে। দুই সন্তানের মধ্যে এক ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় মাকে দেখাশোনা করে না, আর এক মেয়ে বিবাহিত স্বামীর সংসারে। শারীরিক নানা রোগে ভুগতে থাকা কছিরন একটি ভাঙা ঘরের কোণে অসুস্থ অবস্থায় কাটাচ্ছিলেন দিনরাত।

‎এমন করুণ চিত্র চোখে পড়ে ‘আর্ন এন্ড লিভ’র এক সদস্যের। তিনি বিষয়টি জানান সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন জেসিকে। মানবিক এই উদ্যোক্তা বিষয়টি জানার পরই উদ্যোগ নিয়ে কছিরনের পাশে দাঁড়ান। তার নির্দেশে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী টিম দ্রুত ঘর নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নেয়।

পরবর্তীতে সংগঠনটির সদস্যরা নিজ উদ্যোগে ঘর নির্মাণের যাবতীয় কাজ শুরু করে দেন নির্মাণ সামগ্রী কেনা থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়ার তদারকি পর্যন্ত। অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে তা হস্তান্তর করা হয় কছিরন বেওয়াকে।

ঘর হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সমাজকর্মী আতাউর রহমান, মোহাম্মদ আলী, নাঈম হাসান, আরিফুল ইসলাম, মো. আজিজ, তারেক খান, সালাম হোসাইন, নিমা প্রমুখ।

‎নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত কছিরন বেওয়া বলেন, একটি থাকার মতো ঘরও আমার ছিল না। আজ যারা আমাকে ঘর দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছি। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন। দোয়া করি, যারা এই কাজ করেছেন, আল্লাহ যেন তাদের আরও ভালো কাজ করার তৌফিক দেন।

‘আর্ন এন্ড লিভ’র কর্মী আতাউর রহমান বলেন, অসহায় কছিরন বেওয়াকে একটি টিনশেড ঘর দিতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। ফরিদা ইয়াসমিন জেসি আপার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও দিকনির্দেশনায় ঘরটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতেও অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের পাশে থেকে আমরা মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাব।

‎স্থানীয় বাসিন্দা বিলাল মিয়া বলেন, আর্ন এন্ড লিভ’র এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এমন মানবিক কাজ সমাজে বিরল উদাহরণ। সংগঠনটি বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে অসহায়, প্রতিবন্ধী ও দুঃস্থ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে এটি সমাজসেবায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

‎উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ‘আর্ন এন্ড লিভ’ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরিব-অসহায়, এতিম, প্রতিবন্ধী ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের আত্মনির্ভর করে তুলতে সংগঠনটি সারাদেশে মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।

সদ্য সংবাদ/এসএইচ

সম্পর্কিত বিষয়: