বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

|২১ শ্রাবণ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:২৪, ৬ আগস্ট ২০২৫

জুলাই ঘোষণাপত্রে ইসলামী শক্তিকে অবজ্ঞা করা হয়েছে: মামুনুল হক

জুলাই ঘোষণাপত্রে ইসলামী শক্তিকে অবজ্ঞা করা হয়েছে: মামুনুল হক
ছবি: ইন্টারনেট

ঐতিহাসিক ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি অভিযোগ করেন, ইসলামী শক্তির আত্মত্যাগ, ভূমিকা এবং মতামতকে সম্পূর্ণভাবে অবজ্ঞা করা হয়েছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার পাঠ করা জুলাই ঘোষণাপত্র, ঘোষণার আয়োজন এবং একটি মাত্র দলের সঙ্গে আলাপ করে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা—সবকিছুই প্রমাণ করে, ইসলামী নেতাদের অবদান ও মতামতকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এটি শুধু দুঃখজনক নয়, বরং গণতন্ত্র ও ঐতিহাসিক বাস্তবতার প্রতি চরম অবহেলা।”

তিনি বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছেন—আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা শিক্ষক-ছাত্র, প্রবাসী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ভূমিকা উপেক্ষিত হয়েছে। ১৯৪৭-এর আজাদী, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর গণহত্যা এবং পিলখানা ট্র্যাজেডির মতো ঘটনাগুলোর কোনো উল্লেখ না থাকায় ইতিহাসের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে।”

মামুনুল হক অভিযোগ করেন, “বিগত দেড় দশক ধরে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের কেউ গতকালের (৫ আগস্ট) ঘোষণার মঞ্চে স্থান পাননি। বরং একটি নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে, কোনো জাতীয় সংলাপ বা ঐকমত্য ছাড়াই।”

যদিও ঘোষণায় ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা যৌক্তিক বলে তিনি মেনে নেন, তবে বলেন, “আমরা এটি স্বাগত জানাতে পারছি না, কারণ এটি একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত। এতে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র নয়, বরং একটি দলের চাপের কাছে সরকারের আত্মসমর্পণ প্রতিফলিত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, জাতীয় ঐক্য এবং সংবিধানগত সংস্কার ছাড়া কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। অথচ এই ঘোষণায় সেসব বাস্তবতার প্রতিফলন নেই।”

মামুনুল হক আরও বলেন, “যদি ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে আগেভাগে আলোচনা হতো, তাহলে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য, বাস্তবসম্মত এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে রূপরেখা পেতাম। কিন্তু এবারও জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে।”

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি অধ্যাদেশ জারি করে ‘জুলাই সনদ’-কে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে হবে। অন্যথায় এই ঘোষণাপত্র, নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকার—সবই জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।”

সম্পর্কিত বিষয়: