পার্বত্য অঞ্চলে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে: সালাহউদ্দিন

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, “এই ষড়যন্ত্র যাতে সফল না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। অখণ্ড বাংলাদেশ ও সবাই বাংলাদেশি এই পরিচয়কে ধারণ করতে হবে।”
শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে 'বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী প্রসঙ্গ ও জাতীয় নিরাপত্তা ভাবনা' শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি। আলোচনা সভার আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক গবেষণা সংস্থা সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টায় আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি হতে দেখেছি। জাতিকে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ হিসেবে ভাগ করে রাজনীতিকরণ ও বাণিজ্য হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের সব মানুষই মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে। কেউ সশস্ত্র সংগ্রামে না থাকলেও মানসিকভাবে স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের মধ্যেও আজ পর্যন্ত প্রকাশ্যে কেউ সেই স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখায়নি।”
কুকিচিন ঘটনাকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন বলেন, “যেটা আমরা সাদা চোখে দেখছি, সেটার পেছনে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মিয়ানমারের কিছু অঞ্চল নিয়ে বৈশ্বিক শক্তির একটি বৃহৎ পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় আছে। আমাদের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।”
বাংলাদেশের সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, উপজাতি ও নৃগোষ্ঠীকে “বাংলাদেশি” পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “একটি জাতি হিসেবে ঐক্য গড়ে তুলতে হলে সবার একই পরিচয় হতে হবে—বাংলাদেশি।”
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী। সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান এবং এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ আব্দুর রব, ওসমানী সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটিজ স্টাডিজের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুফি মুস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ বরকত আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারেক ফজল, প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ আল ইউসুফ, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবু রুইথি কার্বারি ও অ্যাকটিভিস্ট থোয়াই চিং মং শাক প্রমুখ।