শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

|২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ৮ আগস্ট ২০২৫

গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চান নেতানিয়াহু, শাসনভার দিতে চান আরব বাহিনীকে

গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চান নেতানিয়াহু, শাসনভার দিতে চান আরব বাহিনীকে
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদে সেখানে ইসরায়েলের শাসন চালানোর ইচ্ছা নেই। হামাসকে সরিয়ে গাজার নিরাপত্তা ও শাসনভার আরব বাহিনী বা অন্য কোনো বেসামরিক গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিতে চান তিনি।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, গাজার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ইসরায়েলের জন্য হুমকি নয়—এমন পক্ষের হাতে শাসনভার হস্তান্তরের জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইসরায়েল গাজায় একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে এবং হামাসকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।

ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজা শহর দখলের অনুমোদনের পাশাপাশি পাঁচ দফা নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, জিম্মিদের মুক্তি, গাজার ওপর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ এবং বিকল্প বেসামরিক সরকার গঠন।

তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে দেশ-বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা ও বিরোধী নেতারা একে ‘ফাঁদে পা দেওয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনায় বাধা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। হামাসের পক্ষ থেকে এটিকে “প্রকাশ্য অভ্যুত্থান” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। হামাস কর্মকর্তা ওসামা হামদান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজায় যেকোনো নতুন বাহিনীকে তারা ‘দখলদার বাহিনী’ হিসেবে গণ্য করবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিভক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সাইমন ওয়াল্টার গাজা দখলকে ‘বিশাল ভুল’ বলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় ইসরায়েলকে এ পথে না যেতে আহ্বান জানিয়েছেন। অপরদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি বলেছেন, গাজার পূর্ণ দখল ইসরায়েল সরকারের সিদ্ধান্ত, যুক্তরাষ্ট্রের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পরিকল্পনা নেই।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ৭ অক্টোবরের হামাস হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে প্রায় ৫০ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।