সংবিধানের প্রস্তাবনায় নয়, তপশিলে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ চায় বিএনপি

সংবিধানের চতুর্থ তপশিলে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ যুক্ত করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে চায় বিএনপি। তবে এর বিপরীতে, প্রস্তাবনায় জুলাই ঘোষণার অবস্থান নিশ্চিত করতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ঐকমত্য কমিশনের এগারতম দিনের সংলাপ শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সংবিধান সাহিত্য নয়, এটি আইন। একাত্তরের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রকেও মূল সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, বরং পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সপ্তম তপশিলে যুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে রাজনৈতিক মূল্য বিবেচনায় জুলাই ঘোষণাকে তপশিলে যুক্ত করাই যৌক্তিক হবে।”
বিএনপির প্রস্তাবে ‘ক্রান্তিকালীন বিধান’ অংশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বীকৃতি এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অবস্থান সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। সালাহউদ্দিন জানান, সরকারের একজন উপদেষ্টা সম্প্রতি বিএনপিকে ‘জুলাই ঘোষণা’র খসড়া দিয়েছে, যা বিএনপির ১২ ফেব্রুয়ারির প্রস্তাবনার কিছু প্রতিফলন বহন করে।
তবে সংবিধানের মূল প্রস্তাবনায় ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্তির দাবিতে অনড় অবস্থানে আছে এনসিপি। দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “জুলাই ঘোষণা হলো রাষ্ট্র পরিচালনার পাথেয়। এটি সংবিধানের বাইরের কোনো তপশিলে নয়, বরং মূল প্রস্তাবনায় থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সংবিধান নতুন হোক বা পুরোনো, এই ঘোষণার সাংবিধানিক স্বীকৃতি এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু তপশিলে যুক্ত করে পাশ কাটিয়ে যাওয়া গ্রহণযোগ্য হবে না।”
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, “মূল সংবিধানে জুলাই অভ্যুত্থান রাখলে ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ কিংবা ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের স্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। ফলে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটি চতুর্থ তপশিলে অন্তর্ভুক্ত করাই বাস্তব সম্মত।”
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে চলমান মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তপশিল আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। তাই জুলাই ঘোষণাকে নতুন একটি প্যারায় যুক্ত করে, একটি রাজনৈতিক ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।”