আশ্রয় নয়, গাজার স্কুলে নেমে এলো মৃত্যু

গাজার হালিমা আল-সাদিয়াহ স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত মানুষেরা হয়তো ভেবেছিলেন, কিছুটা নিরাপত্তা পাবে এই স্কুলে। কিন্তু ভোর না হতেই তাদের আশ্রয়স্থলটি রূপ নেয় মৃত্যুপুরীতে। একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণে শ্রেণিকক্ষগুলো মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়, ছিন্নভিন্ন হয়ে ছিটকে পড়ে নারী ও শিশুর দেহ।
ধ্বংসস্তূপের ধুলোয় দাঁড়িয়ে ক্ষীণ স্বরে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলেন আবু হাইথাম খাল্লা। বললেন, ‘চারপাশে কেবল ধুলোর ধোঁয়া দেখতে পেলাম। তখনই বুঝলাম, এই জায়গাটা সরাসরি লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।’
এই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল অন্তত এক হাজারের বেশি মানুষ। ধসে পড়া বেঞ্চ, ব্ল্যাকবোর্ড আর দেয়াল সাময়িকভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছিল তাদের জন্য। কিন্তু সেই আশ্রয়ও কেড়ে নিল নির্মম বাস্তবতা।
আবু হাইথাম আরও বলেন, ‘এই বিস্ফোরণের আতঙ্ক ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। কান্না, আর্তনাদ, ধ্বংস আর মৃত্যু একসঙ্গে নেমে এসেছিল আমাদের ওপর।’
তিনি জানান, অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের সবাই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আহমেদ খাল্লা বলেন, ‘আমি এক শ্রেণিকক্ষে বহু মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছি। শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন… বাতাসে তখন পোড়া মাংসের গন্ধ।’
তার বর্ণনা যেন থমকে দেয় সময়। এক পলক থেমে গিয়ে বললেন, ‘আমি দেখেছি এক মেয়ের দেহ পড়ে আছে, কিন্তু মাথা নেই। সত্যিই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না নিজের চোখকে।’
গাজার আকাশ এখনও ঢেকে আছে ধোঁয়ায়। বাতাসে মিশে আছে কান্না, মৃত্যু আর দুঃস্বপ্নের ভার। হালিমা আল-সাদিয়াহ স্কুলটি আজ নিঃশব্দে বলে চলেছে একটি জাতির হৃদয়ভাঙা আহ্বান ‘আশ্রয় চাই, বাঁচতে চাই… কিন্তু কোথায়?’