রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

|২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২১, ১০ আগস্ট ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্ক ধাক্কায় বড় ধস ভারতের শেয়ারবাজার

ট্রাম্পের শুল্ক ধাক্কায় বড় ধস ভারতের শেয়ারবাজার
ছবি: ইন্টারনেট

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ভারতের শেয়াবাজার বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সেনসেক্স, নিফটি ৫০ এবং ব্যাংক নিফটি-এই তিনটি সূচকেই প্রায় ১ শতাংশ করে দরপতন হয়েছে। দিন শেষে সেনসেক্স দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৮৫৭ .৭৯ পয়েন্টে, নিফটি ৫০ হয় ২৪ হাজার ৩৬৩.৩০ পয়েন্টে এবং ব্যাংক নিফটি দাঁড়ায় ৫৫ হাজার ৪.৯০ পয়েন্টে।

বিএসই-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোট বাজারদাম  এক দিনে প্রায় ৫  লাখ কোটি রুপি কমে ₹৪৪৫ লাখ কোটি রুপি থেকে ₹৪৪০ লাখ কোটি রুপিতে নেমে আসে। সব খাতে ব্যাপক বিক্রির চাপের ফলে এ পতন ঘটে। সাপ্তাহিক হিসাবে দেখা গেছে, টানা ছয় সপ্তাহ সূচকের পতন চলছে। ৮ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে সেনসেক্স ও নিফটি ৫০ উভয়ই প্রায় ১ শতাংশ কমেছে।

এইচডিএফসি ও ভারতীয় এয়ারটেলের শেয়ারদর বড় পতনের মুখে পড়ায় সূচকের নিম্নমুখী ধারা ত্বরান্বিত হয়। নিফটির অধিকাংশ খাতেই গত সপ্তাহে দরপতন হয়েছে। স্মল ক্যাপ ও মিড ক্যাপ সূচক যথাক্রমে ১ দশমিক ৪ ও ১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। তবে ব্যাংক ও ধাতু খাত কিছুটা লাভ করেছে। বিপরীতে আইটি, ফাইন্যান্স, জ্বালানি, তেল-গ্যাস, ভোগ্যপণ্য এবং ওষুধ খাতের উল্লেখযোগ্য দরপতন হয়েছে।

বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারদর প্রায় ৭ শতাংশ কমেছে। বস্ত্র রপ্তানিকারক কেপিআর মিল, গোকলদাস এক্সপোর্ট, বর্ধমান টেক্সটাইল ও ট্রিডেন্টের শেয়ারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে হিরো মোটোকর্প ও এলআইসির শেয়ারদর বেড়েছে।

দ্য মিন্টের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ভারতের শেয়ারবাজারে নতুন করে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। কোম্পানিগুলোর আয় হ্রাস, অতিমূল্যায়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগের বড় অঙ্কে বহির্গমন পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৫০ শতাংশ শুল্কের কারণে ভারতের জিডিপি প্রায় ১ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।

জিওজিত ইনভেস্টমেন্টসের গবেষণা প্রধান বিনোদ নায়ারের মতে, মার্কিন শুল্কের প্রভাব নিয়ে আশঙ্কায় ভারতীয় শেয়ারবাজার তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক বিক্রির ফলে সূচকের ওপর চাপ আরও বেড়েছে। তিনি জানান, এ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২৫ ও ২০২৬ সালের ভারতের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে, যা অর্থনীতি ও বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে।

বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। জানুয়ারিতে বিপুল অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ বাজার থেকে বেরিয়ে যায়। মার্চে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও জুলাই থেকে আবার বিনিয়োগ কমতে শুরু করেছে। আগস্টেও ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাবে এ প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।