ব্রিটেনে ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনের ৪৬৬ জন সমর্থক গ্রেফতার

ব্রিটিশ সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ফিলিস্তিনপন্থি সংগঠন প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এবার সেই সংগঠনের ৪৬৬ জন সমর্থককে গ্রেফতার করেছে লন্ডন পুলিশ। মেট্রোপলিটন পুলিশ শনিবার (৯ আগস্ট) এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে জানিয়েছেন, ‘সংগঠনটিকে সমর্থন জানানোর জন্য রাত ৯টা পর্যন্ত ৪৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনপন্থী যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সংগঠন হলো প্যালেস্টাইন অ্যাকশন। এই সংগঠনটি মূলত ইসরায়েলে ব্রিটিশ সরকারকে অস্ত্র সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর কাজে বাধা প্রদান করার চেষ্টা করে। গত জুনে এই সংগঠনের দুই সদস্য ব্রিটিশ বিমান ঘাঁটিতে প্রবেশ করে দুটি যুদ্ধ বিমানের ক্ষতি করে। এজন্য সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দেন ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা। নিষেধাজ্ঞার ফলে সংগঠনটিকে হামাস, আল-কায়েদা বা আইএসআইএসের মত সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় রাখা হয়েছে
শনিবার বিকালে লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে ডিফেন্ড আওয়ার জুরিজ আয়োজিত বিক্ষোভে শত শত মানুষ অংশ নেয়। বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৮০ বছর বয়সী এক নারী সিএনএনকে বলেন, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তকে ‘একটি প্রহসন’ হিসেবে প্রমাণের জন্য তিনি বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। তবে এর আগেই লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ সতর্ক করেছিল যে, নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থনকারী যে কাউকে গ্রেফতার করা হবে।
এছাড়াও বৃদ্ধ মহিলা বলেন, আয়োজকরা কমপক্ষে ৫০০ জনকে শান্তিপূর্ণভাবে প্ল্যাকার্ড হাতে বসাতে চেয়েছিলেন। ‘আমি দেখেছি কয়েকজনকে পুলিশ টেনে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সেখানে সবাইকে গ্রেপ্তার করার মত পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না।’
আয়োজকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, ‘আমি গণহত্যার বিরোধিতা করি, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি’, এমন প্ল্যাকার্ডে লেখা হাতে নিয়ে বিক্ষোভে এক হাজারের অধিক মানুষ অংশ নেয়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার সময় প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ জন উপস্থিত ছিলেন।
নগর পুলিশের সদরদপ্তর স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড বলেছে, ‘আমরা নিশ্চিত আজ যারা পার্লামেন্ট স্কয়ারে এসে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সমর্থনকারী প্ল্যাকার্ড ধরেছিলেন, তাদের হয় গ্রেফতার করা হয়েছে অথবা প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অনেকে ছিল দর্শক, সাংবাদিক বা এমন কেউ- যাদের কাছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সমর্থনকারী কোনো প্ল্যাকার্ড ছিল না।’
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার পুলিশকে ধন্যবাদ জানায় এই ধরণে বিক্ষোভকে সামাল দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভ করার অধিকার আমরা দৃঢ়ভাবেই রক্ষা করি, কিন্তু এটি আলাদা প্রেক্ষাপট; একটি নির্দিষ্ট, নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রতি সমর্থনের বিষয়।’ এ গ্রেফতারে নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি ইউকে এক্স পোস্টে লেখেছে, ‘এ ঘটনায় মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ জমায়েতের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করেছে।’