থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে যুদ্ধের দামামা, নিহত ৩

কম্বোডিয়ার রকেট হামলায় দুই থাই বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তের ওপারে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে আঘাত হেনেছে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ভোরে বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির পর পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হয়ে ওঠে। থাই সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে গুলিবর্ষণ করেছে এবং নির্দিষ্ট সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে থাই সেনাবাহিনী জানায়, এফ-১৬ বিমান হামলা চালিয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কম্বোডিয়ার ‘স্পেশাল মিলিটারি রিজিয়ন কমান্ডস ৮ ও ৯’-এর ঘাঁটিগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে থাই বাহিনী দাবি করেছে।
এর আগে থাই সেনাবাহিনী জানায়, সীমান্তবর্তী এলাকায় দুটি রকেট আঘাত হানার পর তারা ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে।
রয়টার্সের বরাতে থাই সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র রিচা সুকসুয়ানন জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সামরিক লক্ষ্যের ওপর বিমান শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে।
থাই সামরিক কর্মকর্তা সুরাসান কংসিরির তথ্য অনুযায়ী, সীমান্তের ছয়টি স্থানে এখনো সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। এতে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুসহ তিনজন বেসামরিক আহত হয়েছেন।
এই সংঘর্ষের জন্য উভয় দেশ পরস্পরকে দায়ী করছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, থাইল্যান্ড বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন করছে, ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে এবং বিমান হামলার মাধ্যমে জোরপূর্বক কম্বোডীয় ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের এই হামলা ‘বর্বর ও অবৈধ সামরিক আগ্রাসন’, যা জাতিসংঘ সনদ, আসিয়ানের নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, থাই যুদ্ধবিমান দুটি পৃথক স্থানে বোমাবর্ষণ করেছে, যা পুরোপুরি কম্বোডিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সওচেতা এ হামলাকে বেআইনি ও দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি এবং আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার ভিত্তি লঙ্ঘন করেছে।
তিনি সতর্ক করে জানান, যে কোনো মূল্যে কম্বোডিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের সামরিক বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে, সীমান্তে চলমান উত্তেজনার কারণে থাইল্যান্ড সমস্ত সীমান্ত পয়েন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক সামরিক কর্মকর্তা।