দিল্লি হামলার জন্য পাকিস্তান নয় দায়ী তুরস্ক! কোডনেম ছিল উকাসা
দিল্লির লালকেল্লায় সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে তুরস্কের নাম জড়াচ্ছে বলে দাবি করেছেন ভারতীয় তদন্ত কর্মকর্তারা। তারা জানান, তুরস্ক থেকে ‘উকাসা’ ছদ্মনামের এক ব্যক্তি এই হামলার নীলনকশা আঁকেন এবং ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উমর উন নবির নেতৃত্বাধীন টিমকে দিতেন দিকনির্দেশনা।
নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে, উকাসা ছিল দিল্লিভিত্তিক উমর নবির সন্ত্রাসী গ্রুপ, নিষিদ্ধ সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ ও আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের পাকিস্তানভিত্তিক পরিচালকদের মধ্যে মূল সংযোগকারী। কর্মকর্তারা জানান, এই ষড়যন্ত্রের বীজ ২০২২ সালে তুরস্কে রোপিত হয়। উমর ও আরও তিনজন তখন তুরস্কে গিয়েছিলেন।
উমর ২০২২ সালের মার্চে আঙ্কারায় দুই সপ্তাহ অবস্থান করেন। প্রথমে টেলিগ্রামে, পরে সিগন্যাল ও সেশনসের মতো এনক্রিপটেড অ্যাপে তাদের পরিকল্পনার কথাবার্তা চলত। উকাসা গোপন সেল তৈরি ও ডিজিটাল ফাঁকি দেওয়ার কৌশলও শিখিয়েছেন।
তদন্তকারীরা বিশ্বাস করেন, উকাসা এই হামলার পরিকল্পনা দেন। পরিকল্পনায় একাধিক যানবাহনে বিস্ফোরক ভর্তি করে ধারাবাহিক হামলা চালানোর ছক আঁকা হয়। অভিযানের জন্য তিনটি গাড়ি কেনা হয়েছিল—একটি হুন্ডাই আই-২০, একটি লাল ফোর্ড ইকোস্পোর্ট এবং একটি মারুতি ব্রেজা।
গত সোমবার (১০ নভেম্বর) লালকেল্লার কাছে উমরের হুন্ডাই আই-২০ বিস্ফোরিত হয়, এতে ঘটনাস্থলেই উমর নিহত হন। ফরিদাবাদ থেকে ইকোস্পোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে এবং ব্রেজা গাড়ির খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পুলিশের ধারণা, অবশিষ্ট গাড়িতেও বিস্ফোরক থাকতে পারে।
উমরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ডা. মুজাম্মিল এই বছরের জানুয়ারি মাসে লালকেল্লা পরিদর্শন করেছিলেন। তাঁরা স্মৃতিস্তম্ভের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছিলেন, যাতে ২০২৬ সালের ভারতীয় প্রজাতন্ত্র দিবসে বড় হামলা চালানো যায়।
২০২২ সাল থেকে দলটি ৩৫০ কেজির বেশি বিস্ফোরক সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও অল্প পরিমাণ আরডিএক্স ছিল। এ বছরের শুরুর দিকে ফরিদাবাদ থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়, মুজাম্মিলকে গ্রেপ্তার করা হয়, এরপর উমর পালিয়ে যান এবং দিল্লি-এনসিআরজুড়ে ১৬ ঘণ্টা ড্রাইভ করার পর আই-২০ গাড়ি বিস্ফোরিত হয়।
তদন্তে আরও জানা গেছে, দিল্লির পাশাপাশি অযোধ্যাও তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল। ২৫ নভেম্বরের দিকে রামমন্দিরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের সময় হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
ভারতীয় তদন্তকারীরা উকাসার ডিজিটাল কর্মকাণ্ড ও পাকিস্তানি সন্ত্রাসী পরিচালকদের সঙ্গে তার যোগসূত্র খুঁজে বের করতে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা চাইছেন। প্রতিটি এনক্রিপ্টেড চ্যাট ও বিদেশি অর্থ লেনদেনও পরীক্ষা করা হচ্ছে। কর্মকর্তাদের মতে, তুরস্ক সংযোগই এই মামলার মূল কেন্দ্রবিন্দু।



























