রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

|২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ২৩ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্দোলন, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্দোলন, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরোধিতায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে ডজনখানেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এসব শাস্তির মধ্যে রয়েছে পাঠ্যক্রম থেকে স্থগিতাদেশ, বহিষ্কার এবং একাডেমিক ডিগ্রি বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত।

শিক্ষার্থী অধিকার সংগঠন ‘কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপারথাইড ডাইভেস্ট (কুয়াড)’ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থীকে এক থেকে তিন বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে স্থগিত অথবা স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, এসব শাস্তি মূলত ২০২৫ সালের মে মাসে বাটলার লাইব্রেরিতে বিক্ষোভ এবং ২০২৪ সালের বসন্তে অ্যালামনাই উইকেন্ড চলাকালে আন্দোলন শিবির গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে। একাডেমিক পরিবেশে বিঘ্ন সৃষ্টি ও নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণে শিক্ষার্থীদের এসব পরিণতির মুখে পড়তে হয়েছে বলেও জানানো হয়।

কুয়াডের ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া শাস্তিমূলক পদক্ষেপ অতীতের যেকোনো শিক্ষা-আন্দোলনের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর। সংগঠনটি জানায়, তারা দমে যাবে না এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

২০২৪ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থী আন্দোলন গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রতিবাদের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিউইয়র্ক সিটির শত শত পুলিশকে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি দিলে আন্দোলন শিবিরগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় এবং বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে দমননীতির পরও শিক্ষার্থীরা মে মাসে চূড়ান্ত পরীক্ষার সময় বাটলার লাইব্রেরি দখল করে রাখে। তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত কোম্পানিগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবি জানায় এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

কলাম্বিয়ার বিচারিক বোর্ড নিশ্চিত করেছে, তারা বহিষ্কার, স্থগিতাদেশ ও ডিগ্রি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এগুলোকে ‘রিডিং পিরিয়ডে বিশৃঙ্খলার’ প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়েছে। যদিও কতজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি, তবে এটিই ওই সময়কার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

বর্তমানে এই আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান পুনরুদ্ধারের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন অভিযোগ করে, বিশ্ববিদ্যালয় ইহুদি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া হয়রানি রোধে ব্যর্থ হয়েছে, এবং সেই কারণেই অনুদান বন্ধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ট্রাস্টি ক্লেয়ার শিপম্যানকে চলতি বছরের মে মাসে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেন। তারা অভিযোগ করেন, তিনি ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনে দমনমূলক ভূমিকা পালন করেছেন।