রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

|৩০ কার্তিক ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:০১, ৪ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১৭:০১, ৪ অক্টোবর ২০২৫

‘বৈধ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার কারও নেই’

‘বৈধ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার কারও নেই’
ছবি: সংগৃহীত

কোনো রাজনৈতিক দলের ইচ্ছার কাছে কখনোই মাথা নত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বৈধ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার কারও নেই। তা না হলে ভবিষ্যতে একের পর এক দাবির মুখে একই নজির সৃষ্টি হবে, যা দুই বছর বা পাঁচ বছর পর বারবার সংবিধান পরিবর্তনের চাপ তৈরি করবে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দলের জুলাই সনদ ও আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (পিআর) ইস্যুতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘রাষ্ট্র কোনো ছেলেখেলা নয়। ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যাবে না। রাষ্ট্রকে চলতে হবে নিয়মতান্ত্রিক পথে। জনগণের অভিপ্রায়ই চূড়ান্ত, জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’

‘সংবিধান কচুপাতার পানি নয়’ উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদি জনগণ ‘হ্যাঁ’ বলেন, তবে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা বৈধ ম্যান্ডেট নিয়ে সেই সনদ বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু তা বাদ দিয়ে যদি অবিলম্বে সাংবিধানিক আদেশে পরিবর্তনের দাবি তোলা হয়, সেটি হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। সংবিধান এমন কোনো জিনিস নয় যে ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করা যাবে।

স্বাধীনতার ইতিহাস টেনে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই গণপরিষদ গঠন করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করেছিলেন। বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই পথ ধরে সংবিধান রচিত হয় এবং একাধিকবার সংশোধন হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭ বার সংবিধান পরিবর্তন হয়েছে, ভবিষ্যতেও সংশোধন হতে পারে, তবে তা অবশ্যই সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে।

জাতীয় সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণপরিষদ হোক বা সংসদ, যেভাবেই সংশোধন হোক না কেন—প্রক্রিয়াটি সাংবিধানিক ও আইনসম্মত হতে হবে।

আনুপাতিক পদ্ধতির সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘পিআর মানে স্থায়ী অস্থিরতা। পৃথিবীর যেখানে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে, সেখানেই স্থিতিশীল সরকার ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। নেপালের উদাহরণ সামনে আছে। বারবার সরকার বদল হয়, কিন্তু জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয় না।’

তিনি আরও বলেন, পিআর পদ্ধতিতে স্বাধীন প্রার্থীদের কোনো সুযোগ থাকে না, যা তাদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে। ফলে এই পদ্ধতি দেশে অস্থিরতা তৈরি করবে এবং জাতীয় নির্বাচনের সময় বিলম্ব ঘটাতে পারে। এতে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঘটতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এনডিপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল হারুন। সভা সঞ্চালনা করেন মহাসচিব জামিল আহমেদ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণ দলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান, ডেমোক্রেটিক লীগের খোকন চন্দ্র দাস, জনতার অধিকার পার্টির তরিকুল ইসলাম, ন্যাপের আবদুল বারেক, এনডিপির আওলাদ হোসেন প্রমুখ।

সর্বশেষ