ভারতে গণবিক্ষোভের আশঙ্কা, সব আন্দোলন নিয়ে গবেষণার নির্দেশ অমিত শাহ’র

শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালে সম্প্রতি তরুণদের নেতৃত্বে গণআন্দোলনের মুখে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে এধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গণবিক্ষোভে সরকারের পতন ভারতকেও ভাবাচ্ছে। মোদি সরকার শঙ্কা করছে, একই ধরনের আন্দোলনের ঢেউ ভারতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। খবর ইন্ডিয়া টূডে।
ইন্ডিয়া টূডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশের পুলিশ গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যুরোকে (বিপিআরঅ্যান্ডডি) একটি সমন্বিত গবেষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁরা স্বাধীনতার পর থেকে, বিশেষ করে ১৯৭৪ সালের পর ভারতে ঘটে যাওয়া সব আন্দোলনের ইতিহাস, পটভূমি, অর্থনৈতিক প্রভাব, চূড়ান্ত ফলাফল এবং পেছনে থাকা গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকাও খতিয়ে দেখবেন।
অমিত শাহের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জন্য একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করতে হবে, যাতে বৃহৎ গণআন্দোলন বা ‘স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সংগঠিত আন্দোলন’ আগে থেকেই প্রতিরোধ করা যায়। গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবির (ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো) আয়োজিত দুদিনব্যাপী ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজিস কনফারেন্স-২০২৫’-এ এ নির্দেশনা দেন অমিত শাহ।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘বিপিআরঅ্যান্ডডি–কে বিশেষভাবে বলা হয়েছে এসব আন্দোলনের কারণ, ধরন এবং ফলাফল বিশ্লেষণ করতে, যাতে পেছনের খেলোয়াড়দের চিহ্নিত করা যায়। যাতে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরির মাধ্যমে ভবিষ্যতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর দ্বারা সংগঠিত বড় আন্দোলন রোধ করা সম্ভব হয়।’
অমিত শাহের নির্দেশনায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিপিআরঅ্যান্ডডি একটি বিশেষ টিম গঠন করছে। এই টিম রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে পুরোনো মামলার নথি ও সিআইডি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করবে। একই সঙ্গে আন্দোলনের আর্থিক দিক খতিয়ে দেখতে ইডি, এফআইইউ–আইএনডি ও সিবিডিটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব সংস্থাকে সন্ত্রাসী অর্থায়ন নেটওয়ার্ক শনাক্ত ও নির্মূলের জন্য এসওপি তৈরির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।
শাহ আরও নির্দেশ দিয়েছেন, বিপিআরঅ্যান্ডডি রাজ্য পুলিশের সহযোগিতায় ধর্মীয় সমাবেশ নিয়ে গবেষণা চালাবে, যাতে পদদলিত হয়ে মৃত্যু বা অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।
এ ছাড়া, খালিস্তানি উগ্রবাদ ও পাঞ্জাবে ক্রমবর্ধমান অপরাধ মোকাবিলায় এনআইএ, বিএসএফ ও এনসিবিকে পৃথক কৌশল প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে এমন একটি টিম গঠন করতে হবে, যারা পাঞ্জাব সংক্রান্ত বিষয়গুলোর পটভূমি ভালোভাবে জানেন। যাতে বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলায় ভিন্ন ধরনের কৌশল তৈরি করা যায়।’
তিনি আরও জানান, এনআইএ এর উচিত সন্ত্রাস-অপরাধ সংযোগের দেশীয় সংযোগগুলো ভাঙার জন্য নতুন-উদ্ভাবনী কৌশল তৈরি করা, যার মধ্যে জেলে থেকে নেটওয়ার্ক পরিচালনা প্রতিহত করতে সেই অপরাধীদের অন্য জেলাগুলোতে স্থানান্তর করাও অন্তর্ভুক্ত।