শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

|২২ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২৩ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১০:২৫, ২৩ জুলাই ২০২৫

গাজায় অনাহারে নবজাতক শিশুসহ একদিনে ১৫ জনের মৃত্যু

গাজায় অনাহারে নবজাতক শিশুসহ একদিনে ১৫ জনের মৃত্যু
ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মাত্র একদিনে অনাহারে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে রয়েছে মাত্র ছয় সপ্তাহ বয়সি এক নবজাতক শিশুও। খবরটি নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খাদ্য সংকটে ভুগতে থাকা গাজায় পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দুধের অভাবে প্রাণ হারানো ওই শিশুটির নাম ইউসুফ আবু জাহির। তার চাচা আদহাম আল-সাফাদি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, বাজারে কোথাও দুধ পাওয়া যাচ্ছে না, আর কোথাও থাকলেও একটি ছোট কৌটার দাম ১০০ ডলার পর্যন্ত।

আল জাজিরার তথ্যমতে, মঙ্গলবার অনাহারে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে আরও তিনজন শিশু রয়েছে। তাদের একজন, ১৩ বছর বয়সি আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরের একটি হাসপাতালে মারা যায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইল গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১০১ জন ফিলিস্তিনি অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ৮০ জনই শিশু। অধিকাংশ মৃত্যু ঘটেছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে।

চলতি বছরের মার্চে ইসরাইল গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিলে খাদ্য মজুত দ্রুত ফুরিয়ে যায়। পরে মে মাসে সীমিত পরিসরে সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। এই সহায়তা বিতরণ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। এতে জাতিসংঘের কোনো ভূমিকা নেই।

তবে সহায়তা গ্রহণের জন্য জিএইচএফ-এর বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশে জড়ো হওয়া মানুষজন প্রায়ই প্রাণ হারাচ্ছেন। জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের পর থেকে এসব সহায়তা কেন্দ্রে এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, জিএইচএফ-এর এই সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থা কার্যত এক ধরনের ‘নৃশংস মৃত্যুফাঁদ’। সহায়তার অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হচ্ছে, যা এক ধরনের বৈধ হত্যায় পরিণত হয়েছে।

অন্যদিকে ইসরাইল দাবি করছে, হামাস এসব সহায়তা ছিনিয়ে নিচ্ছে, যদিও এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। জিএইচএফ জাতিসংঘের তথ্যকে ‘অতিরঞ্জিত ও ভুল’ বলে অভিহিত করেছে।