হালদার পানি বিপৎসীমার পথে, বন্যার আশঙ্কা

ফেনীর মুহুরি ও সেলোনিয়ার পর এবার চট্টগ্রামের হালদা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এতে নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
বুধবার প্রকাশিত নিয়মিত বুলেটিনে জানানো হয়েছে, মুহুরি ও সেলোনিয়া নদীর পানি ইতিমধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় নদীগুলোর পানি স্তর স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
চট্টগ্রামের হালদা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এটি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই অঞ্চলে আগামী একদিন ভারি এবং পরবর্তী দুই দিন মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফেনী, সাঙ্গু ও গোমতী নদীর পানি বাড়লেও মাতামুহুরি নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। গোমতীর পানি আরও বাড়তে পারে, তবে সাঙ্গু ও মাতামুহুরির পানি কমতে পারে। পরবর্তী দুই দিন এই নদীগুলোর পানি স্তর হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে সিলেট বিভাগের মনু, ধলাই ও খোয়াই নদীর পানি বাড়ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দুই দিনের মধ্যে পানি স্তর স্থিতিশীল হতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি এখন স্থিতিশীল থাকলেও আগামী দুই দিন তা বাড়তে পারে। এরপর তিন দিন পর্যন্ত তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। একই সঙ্গে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানিও বাড়ছে এবং এই ধারা পাঁচ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশে অবস্থানরত একটি লঘুচাপ বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বাতাসের চাপের তারতম্য বাড়ছে এবং দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
লঘুচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে বুধবার সারাদেশেই কম-বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়ার বুলেটিন অনুযায়ী, দেশের সাতটি বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুরের কিছু এলাকায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে।
বৃষ্টির মধ্যেও দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে সর্বোচ্চ ২৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফেনীতে বৃষ্টির প্রবণতা কমেছে, যেখানে ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিভুক্ত হয়েছে। এছাড়া নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে ২০২, চট্টগ্রামে ১৬৯, বরিশালে ১৬০, লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ১৫২ এবং কক্সবাজারে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নীলফামারীর ডিমলায় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন রাঙামাটিতে ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।