তিন দিন পর অর্ধগলিত লাশ হস্তান্তর করলো বিএসএফ

নওগাঁর পোরশা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক গুলিতে নিহত বাংলাদেশি রাখাল ইব্রাহিমের (৪০) অর্ধগলিত মরদেহ মৃত্যুর তিন দিন পর ফেরত দেওয়া হয়েছে। শনিবার (৫ জুলাই) রাত ৯টায় বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
নিহত ইব্রাহিম নওগাঁর সাপাহার উপজেলার রোদগ্রামের বাসিন্দা ও মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে। সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে মহিষ আনার সময় ভারতের অভ্যন্তরে আগ্রাবাদ এলাকায় বিএসএফের গুলিতে তিনি নিহত হন।
বুধবার (২ জুলাই) দিবাগত রাতে ইব্রাহিম মহিষ আনার উদ্দেশ্যে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ভোরের দিকে তিনি মহিষ নিয়ে ফেরার সময় আগ্রাবাদ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়, এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনাটি ২২৮ নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে প্রায় ৫০০ গজ ভারতের ভেতরে ঘটে।
প্রথমদিকে বিএসএফ গুলির ঘটনা ও লাশ উদ্ধারের বিষয়টি অস্বীকার করলেও বিজিবির বারবার যোগাযোগ ও চিঠিপত্র চালাচালির পর তারা অবশেষে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। শনিবার রাতে ১৬ বিজিবি ও ৮৮ বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ইব্রাহিমকে গুলি করে হত্যার পর তিন দিন ধরে লাশ আটকে রেখে বিএসএফ চরম নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছে। লাশ যখন ফেরত দেওয়া হয়, তখন তা অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল, যা পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়রা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশি একজন রাখালকে বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করা হলো, অথচ আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রথমে চুপ ছিল।’
১৬ বিজিবির নিতপুর ক্যাম্প ইনচার্জ সুবেদার মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে বিএসএফ গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করে। পরে আমাদের চাপের মুখে তারা স্বীকার করে এবং লাশ উদ্ধারের কথা জানায়।’
সাপাহার থানার ওসি আব্দুল আজিজ জানিয়েছেন, যেহেতু ঘটনাস্থল ভারতের ভেতরে, সেহেতু ময়নাতদন্তও সেখানেই সম্পন্ন হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।