জৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগে ফ্যাসিবাদী আমলের বিচারপতি চিফ হওয়ার শংকা রয়েছে - ব্যারিস্টার ফুয়াদ

প্রধান বিচারপতি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তি বজায় রাখলে ফ্যাসিবাদী আমলের বিচারপতিদের মধ্যে থেকেই চিফ জাস্টিস হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
রোববার ( ১৩ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের ১২তম দিনে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চক্রান্ত রোধে জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলের অংশগ্রহণ জরুরি।
তিনি জানান, আওয়ামী আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতিদের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে তারা আপাতত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এককভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিরোধিতা করছেন। এর পরিবর্তে ২-৩ জন জ্যেষ্ঠ বিচারপতির সমন্বয়ে একটি প্যানেলের মাধ্যমে আগামী ১০ বছর প্রধান বিচারপতি মনোনয়ন দেওয়ার পদ্ধতি প্রস্তাব করেছেন তারা। আওয়ামী আমলে নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিদের মেয়াদ শেষ হলে পুনরায় জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে চিফ জাস্টিস নিয়োগের পক্ষে অবস্থান নিতে চান তারা।
এছাড়া তিনি বলেন, বিচারপতি নিয়োগে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচারক নিয়োগ নিশ্চিত করা যায়।
জরুরি অবস্থার বিষয়ে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বর্তমান কাঠামোতে প্রধানমন্ত্রী এককভাবে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন। এটি যেন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয়, সে লক্ষ্যে নতুন বিধানে প্রধানমন্ত্রী নয়, মন্ত্রিসভার অনুমোদন বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে।
তবে এবি পার্টি মনে করে, বাংলাদেশের বাস্তবতায় মন্ত্রিসভা কখনো প্রধানমন্ত্রীর বাইরে যায় না। তাই কেবল মন্ত্রিসভার অনুমোদন যথেষ্ট নয়। জরুরি অবস্থা ঘোষণায় বিরোধী দলীয় নেতা বা তাঁর অনুপস্থিতিতে উপনেতাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে এবি পার্টি, এবং এতে সর্বসম্মতি গঠিত হয়েছে।
ব্যারিস্টার সানী আবদুল হক জানান, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতির মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি নিয়োগে একমত হয়েছেন। তবে কিছু রাজনৈতিক দল দাবি করেছে, নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট পেলে রাজনৈতিক দল বা জোট চাইলে আপিল বিভাগের দুই জ্যেষ্ঠ বিচারপতির মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে চিফ জাস্টিস হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করতে পারবেন—এমন বিধান পরবর্তীতে সংযোজনযোগ্য হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের ৯২ অনুচ্ছেদের আওতায় কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অসাধুতা বা অযোগ্যতার অভিযোগে তদন্ত চলমান থাকলে তাকে প্রধান বিচারপতি করা যাবে না—এমন একটি প্রস্তাব রয়েছে। তবে এবি পার্টি এর বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, একজন বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেই তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অযোগ্য হয়ে যান না। এটি আইনের শাসনের পরিপন্থী।