ফ্রান্সে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রথম কোন নারীর যাবজ্জীবন সাজা
ফ্রান্সের একটি আদালত স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যার দায়ে ২৭ বছর বয়সী আলজেরীয় নারী দাহবিয়া বেঙ্কিরেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। দেশটিতে এটি প্রথমবার কোনো নারীকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হলো।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ১২ বছর বয়সী লোলা দাভিয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন বেঙ্কিরেদ। শিশুটির মরদেহ প্যারিসের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের লবিতে রাখা ট্রাঙ্কে পাওয়া যায়। ওই ভবনে লোলার বাবা-মা কেয়ারটেকারের কাজ করতেন।
রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারক বলেন, অপরাধটি ছিল “অতি নিষ্ঠুর ও নৃশংস” এবং এর ফলে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার যে মানসিক ক্ষত পেয়েছে, তা আদালত বিবেচনায় নিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বলেন, বেঙ্কিরেদের অপরাধের ভয়াবহতা ও অমানবিক নিষ্ঠুরতা বিবেচনায় সর্বোচ্চ শাস্তিই প্রাপ্য।
ফরাসি দণ্ডবিধি অনুযায়ী, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে কোনো শর্তে মুক্তি বা শাস্তি কমানোর সুযোগ নেই। বিচার চলাকালে বেঙ্কিরেদ তার অপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন, কিন্তু তিনজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, তার মধ্যে “মনস্তাত্ত্বিকভাবে বিপজ্জনক বা সাইকোপ্যাথিক প্রবণতা” রয়েছে এবং চিকিৎসার মাধ্যমে মানসিক অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়।
ঘটনার পর ফ্রান্সের রক্ষণশীল ও অতি ডানপন্থী রাজনীতিকেরা কড়া অভিবাসন আইনের দাবি তুলেছেন, কারণ বেঙ্কিরেদ স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশে অবস্থান করছিলেন। তবে নিহত লোলার মা রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁর মেয়ের মৃত্যুকে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ফ্রান্সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অত্যন্ত বিরল। এর আগে এমন সাজা পেয়েছেন সিরিয়াল কিলার মিশেল ফুরনিরে এবং ২০১৫ সালের প্যারিস হামলার অভিযুক্ত সালাহ আবদেসলেম, যেখানে ১৩০ জন নিহত হন।



























