ইসরায়েলের আপত্তিতে গাজার যৌথ বাহিনী থেকে বাদ পড়ছে তুরস্ক
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পাঁচ হাজার সদস্য বিশিষ্ট একটি বহুজাতিক বাহিনী গঠন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তুরস্ক এই বাহিনীতে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে ইসরায়েল তুর্কি সেনাদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন যে বাহিনীর রাষ্ট্রীয় গঠন এমন হওয়া উচিত যাতে ইসরায়েল এতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে—এটি একটি আবশ্যকীয় শর্ত। গাজায় ব্যাপক পুনর্গঠন শুরু হলে নিরাপত্তা শূন্যতা এড়াতে এই বাহিনীটি তৈরি করা হচ্ছে।
এই বাহিনীতে তুরস্ক সেনা পাঠাতে আগ্রহী হলেও ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা তুর্কি সেনাদের এই বাহিনীতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিচ্ছে না।
ইসরায়েল ও তুরস্কের সম্পর্কে তিক্ততা আগেই বেড়ে গিয়েছিল সিরিয়া নিয়ে। আর ইসরায়েল মনে করে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মুসলিম ব্রাদারহুড ও হামাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ।
তবে গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনী থেকে তুরস্ককে বাদ দেওয়া বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, তুরস্ক ট্রাম্পের ২০ দফা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম ‘জামিনদার’ এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সক্ষম সামরিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত।
এই বাহিনীর নেতৃত্ব মিসরের হাতে যেতে পারে।
গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনে কাজ করছে ফ্রান্স–ব্রিটেন, এটি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী না হলেও ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ স্থিতিশীলতা বাহিনীর বেশির ভাগ দেশ চাচ্ছে বাহিনীটিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেট দেওয়া হোক।
গত মঙ্গলবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এই সেলের উদ্বোধন করেন। সেলটিতে কয়েকজন ব্রিটিশ, ফরাসি, জর্ডানীয় ও আমিরাতি উপদেষ্টা রয়েছেন। এই সেল গাজায় ত্রাণ সমন্বয়ের ভূমিকাও গ্রহণ করছে বলে মনে হচ্ছে। যদিও ত্রাণসহায়তা প্রবেশের প্রধান ক্রসিংগুলো এখনো বন্ধ রয়েছে।
এ বাহিনীর কাজ হবে হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিনি সরকারকে নিরাপত্তা দেওয়া, যে সরকার গঠন নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে। যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণ বাতিল করে দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে গতকাল শুক্রবার প্রধান ফিলিস্তিনি দলগুলো একমত হয়েছে, রাজনীতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন কমিটি এই অঞ্চল পরিচালনার দায়িত্ব নেবে।
এদিকে হামাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার প্রশাসন একটি অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিন কমিটির হাতে হস্তান্তর করা হবে, যা স্বাধীন ‘টেকনোক্রেট’দের সমন্বয়ে গঠিত। এই কমিটি আরব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মিলিতভাবে জীবন ও মৌলিক সেবার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। কায়রোর বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সদ্য সংবাদ/এসএইচ



























