গাজা পুনর্গঠনে লাগবে কয়েক প্রজন্ম: জাতিসংঘ
দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের পর গাজায় ফিরতে শুরু করেছেন গাজাবাসী। কিন্তু প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা সিটির নাগরিকদের বাস্তুসংস্থান এখন অনিশ্চিত। জাতিসংঘের আবাসন অধিকার বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার বালাকৃষ্ণ রাজাগোপাল বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র সরবরাহ না করলে পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে না। গাজা শহর পুনর্গঠনে কয়েক প্রজন্ম লেগে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজাগোপাল আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'উত্তর গাজায় ফিরে আসা মানুষের মানসিক প্রভাব ও শারীরিক আঘাত ভয়াবহ। তারা ধ্বংসস্তূপ ছাড়া কিছুই পাচ্ছেন না। এখানে শুধু মানবিক বিপর্যয় নয়, দীর্ঘমেয়াদি পুনর্গঠনের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।'
রাজাগোপাল গাজার ধ্বংসের প্রক্রিয়াকে ‘ডোমিসাইড’ বা গণহারে মানুষের বসতবাড়ি ধ্বংস করে তাঁদের বাস্তুচ্যুত করা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, 'মানুষকে উচ্ছেদ করে একটি অঞ্চলকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা জাতিগত নিধনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গাজার পুনর্গঠন শেষ হতে কয়েক প্রজন্ম সময় লাগবে।'
তিনি আরও বলেন, '১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর যে জাতিগত নিধন চালানো হয়েছিল, সেটির পুনরাবৃত্তির মতো ঘটনা এখানে ঘটেছে। গত দুই বছরের সংঘর্ষে ৬৭ হাজার ৭০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।'
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়ে অস্থায়ী তাঁবু ও আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন। চলতি বছরের শুরুর অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি সময় সহায়তা পাঠানোর চেষ্টা হলেও ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের কারণে তা কার্যকর হয়নি।
মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, গাজার প্রবেশপথে সহায়তার অনুমতি না দিলে মানবিক সংকট আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ও সুষ্ঠু সমাধান জরুরি বলে তারা মনে করছেন।
গাজার স্থানীয়দের মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্বাগত জানানো হলেও তাদের ফিরে আসার পথে সামনে রয়েছে বিশাল ধ্বংসস্তূপ, পানির সংকট, স্বাস্থ্যসেবা ও বিদ্যুতের ঘাটতি। পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের জন্য বহুবর্ষী উদ্যোগ প্রয়োজন।
সদ্য সংবাদ/এমটি



























