পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরার মৃত্যু ঘিরে রহস্যের ছায়া

পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় চলছে সামাজিক মাধ্যমে। প্রায় ৮ থেকে ১০ মাস ধরে ফ্ল্যাটে পড়ে থাকা তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ, যা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।
গত ৮ জুলাই আদালতের নির্দেশে পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে হুমাইরার মরদেহ উদ্ধার করে। জানা যায়, ২০২৪ সালের শুরু থেকেই তিনি ওই অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া পরিশোধ করেননি। বাড়ির মালিক বারবার চেষ্টা করেও তার কোনো সাড়া না পেয়ে শেষমেশ আদালতের দ্বারস্থ হন।
প্রথমে পুলিশ ধারণা করেছিল, অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়তো দুই সপ্তাহ আগে হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভিন্ন চিত্র। সেখানে বলা হয়েছে, মরদেহ অন্তত আট থেকে দশ মাস ধরে ফ্ল্যাটেই পড়ে ছিল। এ সময়ের মধ্যে শরীর ভয়ানকভাবে পচে যায়। মাংস আলাদা হয়ে গেছে, আঙুল ও নখ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, এমনকি হাড় স্পর্শ করার সঙ্গেই ভেঙে পড়ছিল। যদিও শরীরে কোনো ভাঙা হাড় কিংবা বড় ধরনের জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মাথা ও মেরুদণ্ড মূলত অক্ষত থাকলেও কিছু কর্ড অনুপস্থিত ছিল। মরদেহ ঘিরে ছিল বাদামি রঙের পোকামাকড়।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ। তিনি জানান, পচনের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তবে ডিএনএ প্রোফাইলিং এবং টক্সিকোলজি পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষা চলছে।
এদিকে হুমাইরার একটি পুরোনো কণ্ঠস্বর ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছিলেন, “কাজের জন্য ব্যস্ত, আজ এখানে কাল সেখানে। খুব খুশি তুমি মক্কায় গিয়েছো। আমার জন্য অনেক প্রার্থনা কোরো। তোমার এই ছোট্ট বোন বা বন্ধু যাই বলো, তার কেরিয়ারের জন্য দোয়া কোরো।” তিনি এই বার্তাটি কাকে পাঠিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট নয়।
হুমাইরা আসগরের মৃত্যু নিয়ে দেশজুড়ে চলছে চাঞ্চল্য ও নানা জল্পনা-কল্পনা। তদন্তকারী সংস্থা বলছে, সব রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলা সম্ভব হবে।