শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

|৩০ কার্তিক ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ২১:২৩, ১১ নভেম্বর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে এনসিপির মনোনয়ন নিলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মুমিনুল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে এনসিপির মনোনয়ন নিলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মুমিনুল

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী কাজী মুমিনুল হাসান। তিনি দলটির নাসিরনগর উপজেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল সেলের সদস্য।

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী এবং সেক্রেটারি ডা. তাসনিম জারার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি।

মুমিনুল হাসান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফলে এনসিপির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তার উদ্দেশ্য ছিল ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হলেও ২৪-এর আকাঙ্খা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা। ব্যর্থতা বা সফলতা যাই হোক না কেন, শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী অর্ধশতাব্দীর ইতিহাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে আমরা কোনো যথাযোগ্য নেতাকে নির্বাচিত করতে পারিনি। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই আসন থেকে আজ পর্যন্ত স্বনামধন্য মন্ত্রী-এমপি আসলেও নাসিরনগরবাসীর কাঙ্ক্ষিত জীবনমানের উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষার মান এখনো খুবই তলানিতে আছে। এই আসনটি চির অবহেলিত এবং বড় ধরনের কোনো উন্নয়ন হয়নি। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্যাস উত্তোলন ক্ষেত্রটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থিত হলেও নাসিরনগরবাসী এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সুযোগ পেলে এর সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করবো, ইনশাআল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, “নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ফলে তরুণ সমাজের জন্য দেশ গড়ার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের আইনে ২৫ বছর বয়সে সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা থাকলেও বাস্তবে তরুণরা এই স্বপ্ন দেখার সাহস পেতো না। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের ফলে নতুন সাংবিধানিক সেটেলমেন্টের ভিত্তিতে তরুণরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছে। তাই জনগণের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতিতে এসেছি। তবে পুরনো দিনের রাজনীতিবিদদের মতো আমি আমার জনগোষ্ঠীকে কোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেবো না। টাকা-পয়সা দিয়ে ভোটও কিনবো না। জনগণ যদি পরিবর্তন চায়, রাষ্ট্র সংস্কার চায়, সৎ ও দক্ষ নেতৃত্ব চায়, তবে জনগণই আমাকে খুঁজে নেবে—এই বিশ্বাস আমার আছে। আমি বিশ্বাস করি, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই বাংলাদেশে আরেকটি অভ্যুত্থান হবে। সেটা হলো চাঁদাবাজ নির্মূলের অভ্যুত্থান।”

কাজী মুমিনুল হাসানের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর গ্রামে। তিনি ২০১৯ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে ঢাকা জজ কোর্টে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কর্মরত আছেন।

বর্তমানে তিনি তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ‘মাওলানা আবু আহমদ কল্যাণ ট্রাস্টে’র অধীনে সমাজসেবামূলক কাজে নিয়োজিত আছেন। উক্ত ট্রাস্টের অধীনে মসজিদের জন্য শতাধিক অযুখানা ও মসজিদ নির্মাণ, পারিবারিক টিউবওয়েল স্থাপন, শীতকালীন বস্ত্র বিতরণ ও কুরবানী ঈদে শতাধিক পশু কুরবানি ও বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠী হিন্দু ধর্মাবলম্বী হলেও তারা ট্রাস্ট থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা পাচ্ছেন।

তার বাবা মাওলানা আবু আহমদ একজন সরকারি নিকাহ রেজিস্ট্রার ও সাবেক দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট। মা গৃহিনী। ছয় ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। বড় ভাই আবু বকর ছিদ্দিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন ঢাকা জজ কোর্টে অ্যাডভোকেট হিসেবে কর্মরত। ছোট দুই ভাই মুগনিউল হাসান ও মুহাইমিনুল হাসান তুরস্ক সরকারের স্কলারশিপে তুরস্কের দুটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেছেন। ছোট দুই ভাইয়ের একজন রুয়েটে আরবান ও রিজিওনার প্লানিং বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন এবং অপরজন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অধ্যয়নরত।

সদ্য সংবাদ/ মো. শাহিদুল ইসলাম সবুজ 

সম্পর্কিত বিষয়: