কুড়িগ্রামে সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ৪
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে আট বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পরপরই ক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ছিট মালিয়ানি গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর নাম মুরসালিন মিয়া (৮)। সে ওই এলাকার মশিউর রহমান মুছা ও মনজু দম্পতির ছেলে। পরিবারের দাবি, প্রতিবেশী ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মমিনুল ইসলাম (২২) শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা করেছে। ঘটনার পর থেকেই মমিনুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।
পরিবার জানায়, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুরসালিনের বাড়িতে তার বড় ভাই মিমের বিয়ের আলোচনা চলছিল। এ সময় মমিনুল ইসলাম শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মুরসালিন আর বাড়ি ফেরেনি। সন্ধ্যায় ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে তার মা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে মমিনুলের বাড়িতে গিয়ে জানতে চাইলে মমিনুল ও তার মা মহসেনা বেগম শিশুটিকে দেখেনি বলে জানায়। পরে আবার খোঁজ নিতে গেলে তারা দরজায় তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
এদিকে শিশুকে না পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় এলাকায় মাইকিং করা হয়। শনিবার রাত ৮টার দিকে মমিনুলের বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকে মুরসালিনের মরদেহ দেখতে পান স্বজনরা। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
লাশ উদ্ধারের পরই উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত মমিনুলের ও তার নানাবাড়ি ভাঙচুর করে এবং ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। খবর পেয়ে নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মোফাজ্জল হোসেন জানান, ‘দুটি বাড়ির তিনটি শয়নকক্ষসহ পাঁচটি ঘরে আগুন লাগে। আমরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে ভেতরে থাকা আসবাবপত্রের অনেকটাই পুড়ে গেছে।’
পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মমিনুল ইসলামের মা মহসেনা বেগম, বোন ফাহিমা খাতুন, প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমকে আটক করা হয়েছে। তারা মমিনুলকে পালাতে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে নয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আটক চারজনকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’



























