আগামীর বাংলাদেশ হবে দক্ষতার বাংলাদেশ: আমির খসরু

আগামীর বাংলাদেশ হবে দক্ষতার বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, আগামী ২০৩৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি এক ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে। এই বিশাল অর্থনীতির বাজারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে প্রথম ১৮ মাসেই এক কোটি নতুন চাকরি সৃষ্টির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সেই সঙ্গে সিঙ্গাপুর, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়ার আদলে আধুনিক কর্মসংস্থান বাজার গড়ে তোলার প্রস্তুতিও রয়েছে দলের।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল সেরিনায় গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ নেটওয়ার্ক (জেন) বাংলাদেশ এর উদ্যোগে এবং ইউনিভার্সিটি অব স্কিলস এনরিচমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি (ইউএসইটি) এর সহযোগিতায় আয়োজিত “স্কিলিং বাংলাদেশ: জাতীয় প্রবৃদ্ধির জন্য দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বাস্তুতন্ত্রের অগ্রগতি” শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, বিশ্বব্যাপী দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাপান, মধ্যপ্রাচ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে কোটি কোটি দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে পারলে এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে। বিএনপি ভবিষ্যতে সরকারে এলে দেশের তরুণ সমাজকে কাজে লাগিয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবে।
অনুষ্ঠানে “একটি জাতীয় দক্ষতা বাস্তুতন্ত্রের দিকে: দৃষ্টিভঙ্গি এবং চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার। আর “দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আনলক করা” শীর্ষক আরেকটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেন বাংলাদেশ-এর কোষাধ্যক্ষ ও দক্ষতা ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামান।
প্রধান আলোচক ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, আমরা শিক্ষাব্যবস্থাকে বাজারকেন্দ্রিক ও দক্ষতাভিত্তিক করব। শুধু সনদ নয়, বাস্তব কাজের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। ৬৪ জেলার টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোকে আধুনিক দক্ষতা ও চাকরির কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হবে। নারী, প্রতিবন্ধী, প্রবীণ ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কাঠামোবদ্ধ প্রশিক্ষণ, সনদ ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে মূল অর্থনীতিতে যুক্ত করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউএসইটি-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার এ.কে.এম. ফজলুল হক। সঞ্চালনা করেন জেন বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম হাসান রিপন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাবেক সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও নারী উদ্যোক্তা মাহমুদা হাবিবা প্রমুখ।
জাতীয় এই গোলটেবিল বৈঠকে নীতিনির্ধারক, রাজনৈতিক নেতা, উন্নয়ন অংশীদার, শিল্প নেতা, শিক্ষাবিদ ও যুব প্রতিনিধিদের একত্রিত করে বাংলাদেশকে দক্ষতা-চালিত অর্থনীতিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি জাতীয় কাঠামো গঠনের আহ্বান জানানো হয়।
গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ নেটওয়ার্ক (জেন) বাংলাদেশ ২০০টিরও বেশি দেশে বিদ্যমান একটি বৈশ্বিক উদ্যোগের অংশ। এটি বাংলাদেশের দক্ষতা ও উদ্যোক্তা বাস্তুতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্টার্টআপ, উদ্ভাবন, কর্মসংস্থান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে বৈশ্বিক সংযোগ এবং নীতিগত সংলাপ এগিয়ে নিচ্ছে।