রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

|২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ২৩ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৫:০৫, ২৩ জুলাই ২০২৫

মাদক ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যৌথ অঙ্গীকার

মাদক ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যৌথ অঙ্গীকার

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মাদক ও সন্ত্রাস দমনে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) আজ বুধবার (২৩ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ অফিসকক্ষে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহসিন রেজা নকভি’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে মাদক ও সন্ত্রাস দমন, পুলিশ প্রশিক্ষণে পারস্পরিক সহযোগিতা, কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা, রোহিঙ্গা সমস্যা, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়।

স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অভিন্ন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশীদার এবং তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক দিন দিন দৃঢ় হচ্ছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

দুই দেশের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। পাকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে, যেখানে আপাতত এমআরপি পাসপোর্ট প্রদান কার্যক্রম চালু রয়েছে এবং ভবন নির্মাণ শেষ হলে ই-পাসপোর্ট প্রদানের কাজ শুরু হবে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে দেশটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাস দমন ব্যর্থ হলে তা সবার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে এবং এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে।

মাদক সমস্যাকে দুই দেশের বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে পাকিস্তানের মন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তান থেকে পাচার হয়ে আসা মাদক পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রধান সমস্যা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের মাদক প্রবাহ প্রধানত মায়ানমার থেকে হয় এবং দুই দেশ মাদক সমস্যার বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে।

পুলিশ প্রশিক্ষণে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের মন্ত্রী সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেন, যা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সম্মত হন। তিনি বাংলাদেশের সারদা পুলিশ একাডেমিকে উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে বর্ণনা করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, তারা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান করছে না, তবে বিশেষ কোডসহ পাসপোর্ট দিচ্ছে যাতে তাদের শনাক্ত করা যায়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে, যা একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য কঠিন দায়িত্ব। তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে পাকিস্তানের সহযোগিতা কামনা করেন।

বৈঠকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানান এবং উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের জন্য পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

এর আগে মোহসিন রেজা নকভিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হয়। সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মোঃ খোদা বখস চৌধুরী, সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি ও পাকিস্তান দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মুহাম্মদ ওয়াসিফ উপস্থিত ছিলেন।