তালাবদ্ধ মাইলস্টোন স্কুল, গেটে উৎসুক জনতার ভিড়

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এখনো তালাবদ্ধ রয়েছে। দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম, আর নিরব সেই ক্যাম্পাসে নেই কোনো শিক্ষার্থীর আনাগোনা। মূল ফটকের সামনে ভিড় জমিয়েছেন অভিভাবক, স্থানীয় বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের মূল ফটক তালাবদ্ধ। গেটের বাইরের রাস্তাজুড়ে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন, আবার কেউ কেবল দাঁড়িয়ে কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন স্কুল ভবনের দিকে। গণমাধ্যমকর্মীরা ক্যামেরা তাক করে রেখেছেন সেদিকেই, মাঝে-মধ্যে ভেতর থেকে কেউ বের হলে ছুটে যাচ্ছেন তাদের দিকে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘দুই দিন আগেও যেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করত, সেখানে এখন তালা ঝুলছে। মনটা বারবার টানছে, ভেতরে ঢুকে একটু দেখে আসি।’
কলেজ মাঠে এখন নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। কেউ ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গণমাধ্যমকর্মীরাও ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে বাইরে থেকেই তথ্য সংগ্রহ করছেন।
এদিকে, বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ এবং নিহত, আহত ও নিখোঁজদের নাম-ঠিকানা যাচাই করে তালিকা তৈরির জন্য একটি ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলমকে। সদস্যরা হলেন উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম, প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার, কো-অর্ডিনেটর লুৎফুন্নেসা লোপা, অভিভাবক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মোল্লা (যার কন্যা যাইমা জাহান চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী), এবং দ্বাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী মারুফ বিন জিয়াউর রহমান ও মো. ভাসনিম ভূঁইয়া প্রতিক।
কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা যেন সরাসরি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং নিশ্চিত তথ্যের ভিত্তিতে তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই (সোমবার) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু শিক্ষার্থী হতাহত হন। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মর্মান্তিক এই ঘটনার পরদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হয় এবং মানবিক কারণে এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।