জামায়াত বিএনপি এনসিপিকে গোলক ধাঁধাঁয় ফেললেন প্রধান উপদেষ্টা
সরকার বৃহস্পতিবার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেছে। আদেশের আগে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে মতভিন্নতা ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোকে সমন্বিত প্রস্তাব দিতে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে।
বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আদেশে কতটুকু দলগুলোর দাবি প্রতিফলিত হয়েছে। বিএনপি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের বিপক্ষে ছিল; তারা চেয়েছিল প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এটি হোক। একইভাবে বিএনপি গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট একই দিনে গ্রহণের পক্ষে ছিল, যা সরকারের দ্বারা মানা হয়েছে। তবে জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিটি পূরণ হয়নি।
সংসদে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে বিএনপির আপত্তি ছিল। তারা চেয়েছিল উচ্চকক্ষে আসন বণ্টন নিম্নকক্ষের অনুপাতে হোক, যা আদেশে গ্রহণ হয়নি। তবে জামায়াত ও এনসিপির দাবি পূরণ হয়েছে। সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন—বিএনপির এ ভিন্নমতও আমলে নেওয়া হয়নি।
বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট চেয়েছিল, অর্থাৎ নির্বাচনে জয়ী হলে তারা রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভিন্নমত বাস্তবায়ন করতে পারবে। এ দাবি আংশিক পূরণ হয়েছে, তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সরকারি কর্মকমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও ন্যায়পাল নিয়োগের ক্ষেত্রে ভিন্নমত গ্রহণ হয়নি। উদাহরণ হিসেবে, দুদকের নিয়োগ আইনের মাধ্যমে না করে কমিশন ও প্রধান বিচারপতি মনোনীত কমিটির মাধ্যমে করা হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির ভিন্নমত ছিল, তবে তা আদেশে প্রতিফলিত হয়নি। এনসিপি চাইছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, যা প্রায় পূর্ণ হয়েছে। তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ গ্রহণ হয়নি। এছাড়া এনসিপি প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারি করতে চেয়েছিল, কিন্তু রাষ্ট্রপতির নামেই আদেশ প্রকাশিত হয়েছে।
জানুয়ারি নির্বাচনের পর সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার দাবিও আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে। এটি বিএনপির ভিন্নমত বিপরীত, কিন্তু এনসিপি ও জামায়াতের দাবি পূরণ হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান অধ্যাপক উপস্থিতিতে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেন। ২৮ অক্টোবর কমিশনের রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেয়ার পর আদেশে সামঞ্জস্যের চেষ্টা করা হয়। নতুন রাজনৈতিক অনৈক্য সমাধানের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার ইনোভেটিভ আইডিয়া উপস্থাপন করেন।



























