সরকার পতনে আমেরিকার হাত নেই: শেখ হাসিনা
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা প্রায় দেড় বছর পর গণঅভ্যুত্থান এবং তার সরকারের পতন নিয়ে নতুন মন্তব্য করেছেন। সিএনএন–নিউজ এইটিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র বা কোনো পশ্চিমা শক্তির সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই।
হাসিনা বলেন, 'ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের স্থিতিশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাই বিদেশি শক্তির প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের দাবি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো ছিল।'
তবে তিনি জানান, বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করেছেন। অনেকেই সেটাকে ভুলভাবে গণতান্ত্রিক যোগ্যতা হিসেবে দেখেছেন।
গত বছরের জুলাইয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলার পর সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে সারা দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বাড়তে থাকা জনরোষের মুখে শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।
ওএইচসিএইচআর-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তদন্তে তৎকালীন সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিবিসির অনুসন্ধানে ফাঁস হওয়া একটি অডিও ক্লিপে হাসিনা নাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন।
এই ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলমান। মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করা হয়েছে, যার রায় ঘোষণা হবে আগামী ১৭ নভেম্বর।
যদিও বিবিসিকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে সরাসরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এটিকে 'ক্যাঙ্গারু কোর্টের সাজানো নাটক' উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দাবি করেন, পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠলেও তিনি কখনোই নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেননি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে হলে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সদ্য সংবাদ/এমটি



























