সন্তানদের খুঁজে স্কুল-হাসপাতালে ছুটছিলেন অভিভাবকরা

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে গেলে এক মর্মান্তিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘটনায় অন্তত ১১৬ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই স্কুলের শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুর্ঘটনায় আহতদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, গুরুতরদের পাঠানো হয়েছে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
বিমানটি স্কুলের দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়, যেখানে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১টার দিকে ক্লাস শেষ হওয়ার মুহূর্তে বিকট বিস্ফোরণের শব্দে আকাশমুখী আগুনের শিখা দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর পরই সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিজিবি উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেয়।
ঘটনার পরপরই সন্তানদের খোঁজে স্কুল ও হাসপাতালগুলোতে ছুটতে থাকেন অভিভাবকরা। কেউ দুই সন্তানের মধ্যে একজনকে পেয়েছেন, অন্যজনের খোঁজে ছুটছেন। কেউবা পোড়া শরীর নিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। নুরে জান্নাত ইউশা (১১), রবিউল হাসান রোহান (৭ম শ্রেণি), শারমিন (৮ম শ্রেণি) ও রিজভীসহ বহু শিক্ষার্থী আগুনে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে। অনেকেই নিখোঁজ।
আহতদের উদ্ধারে স্কুল থেকে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, সিএমএইচ ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, অনেকের শরীরের ৭০-৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালে রক্তের প্রয়োজন দেখা দিলে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্ত দিতে এগিয়ে আসে।
স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, প্রকল্প-২ নামের ভবনটিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস চলছিল। সেই সময় বিমানটি আঘাত হানে ভবনে এবং তাৎক্ষণিক আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের ভবনগুলোতেও ধাক্কা লাগে বিমানের বিভিন্ন অংশ।
আহত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে এবং চিকিৎসা সহায়তার জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা হাসপাতালগুলোতে কাজ করছেন। অনেক অভিভাবক এখনো সন্তানদের সন্ধানে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটছেন।