রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

|৩০ কার্তিক ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ১০:১৫, ২ নভেম্বর ২০২৫

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় বেড়েই চলেছে নিহতের সংখ্যা, ত্রাণ প্রবেশে বাধা 

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় বেড়েই চলেছে নিহতের সংখ্যা, ত্রাণ প্রবেশে বাধা 
সংগৃহীত ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েলের অবরোধ। প্রতিশ্রুত ত্রাণের মাত্র এক-চতুর্থাংশ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে দেশটি; বাকি ৭৫ শতাংশ ত্রাণ এখনো সীমান্তে আটকে আছে।

রবিবার (২ নভেম্বর) আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। এতে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ২০৩টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১৪৫টি ট্রাক। এটি নির্ধারিত দৈনিক ৬০০ ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ।

বিবৃতিতে গাজা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্যবাহী যানবাহন আটকে দিচ্ছে, যার ফলে ২৪ লাখেরও বেশি মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের ভাষায়, ‌‘মানবিক বিপর্যয়ের সম্পূর্ণ দায় ইসরায়েলের।’

এ অবস্থায় কোনো শর্ত বা বিধিনিষেধ ছাড়া ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গাজার প্রশাসন।

ত্রাণ কার্যক্রম কিছুটা শুরু হলেও ইসরায়েলের আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অধিকাংশ বাসিন্দা এখনো খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে ভুগছেন। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নির্দেশে ত্রাণবাহী কনভয়গুলোকে এখন সীমান্তঘেঁষা ফিলাডেলফি করিডর হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও সংকীর্ণ উপকূলীয় পথে যেতে হচ্ছে। এতে যানজট ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ত্রাণ কার্যক্রম জোরদারে অতিরিক্ত সীমান্তপথ ও অভ্যন্তরীণ রুট চালুর প্রয়োজন রয়েছে।

অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির শর্ত উপেক্ষা করে শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস এলাকায় বিমান, কামান ও ট্যাংকের গোলায় ব্যাপক হামলা চালায়। উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের পূর্বাংশেও একাধিক আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজজুম জানান, প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েলি ড্রোন ও ভারী গোলাবর্ষণে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আকাশে ড্রোনের উপস্থিতি ও অব্যাহত বোমাবর্ষণের কারণে সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরও ৫৯৪ জন আহত হয়েছেন।