স্থল অভিযানের হুমকি ট্রাম্পের, ভেনেজুয়েলা কি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রণক্ষেত্র?
লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবাহ ঠেকাতে এবার সরাসরি স্থল অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, এবার ভূখণ্ডই হবে পরের লক্ষ্য। এতে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, ভেনেজুয়েলা কি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রণক্ষেত্র হতে যাচ্ছে?
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলাভিত্তিক মাদকচক্রের বিরুদ্ধে চলমান সামুদ্রিক অভিযান এবার স্থলভাগেও বিস্তৃত করতে চান ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে নির্দেশ দেন কংগ্রেসকে পরিকল্পনার বিষয়ে অবহিত করতে। যদিও নির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে কিছু জানাননি, তবে তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে মার্কিন বাহিনী ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা শুধু তাদের মেরে ফেলব যারা আমাদের দেশে মাদক আনছে। তারা লাশ হবে একেবারে লাশ। মাদকচক্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার প্রয়োজন নেই, সরাসরি আঘাতই যথেষ্ট।'
এই মন্তব্যের পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সীমান্তজুড়ে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে তিনি ১৫ হাজার সেনা মোতায়েনের পর যুক্তরাষ্ট্রের নৌ-হামলার প্রতিক্রিয়ায় আরও পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর নির্দেশ দেন, যা ।
ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক প্রশ্নের জবাবে মাদুরো বলেন, 'ভেনেজুয়েলার ৯০ শতাংশ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি প্রত্যাখ্যান করছে। আমরা এই ভূমির রক্ষক—একেই কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।'
তিনি আরও দাবি করেন, ভেনেজুয়েলায় কোকো চাষ বা কোকেন উৎপাদন হয় না, বরং যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ‘মাদক পাচারের’ অজুহাত তৈরি করছে।
মাদুরো অভিযোগ করে বলেন, 'তারা এখন ধ্বংস করতে চাওয়া দেশগুলোকে আর কমিউনিস্ট বলে না। এক সময় বলত সন্ত্রাসী, এখন বলে মাদক পাচার।'
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে অন্তত ছয়টি নৌকায় হামলা চালিয়েছে, যেগুলোকে ‘মাদক পরিবহনের মাধ্যম’ বলে দাবি করা হয়েছে। সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন বি–৫২ বোমারু বিমানের উপস্থিতিও আন্তর্জাতিক মহলে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, আফগানিস্তান ও ইরাকের পর এবার লাতিন আমেরিকার নতুন যুদ্ধক্ষেত্র হতে পারে ভেনেজুয়েলা। ট্রাম্প সম্প্রতি নিশ্চিত করেছেন, তিনি দেশটিতে সিআইএ কার্যক্রমের অনুমোদন দিয়েছেন। তাঁর দাবি, মাদুরো সরকার কারাগারের বন্দীদের মুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে এবং উত্তরমুখী মাদকপথে চোরাচালানকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।
সব মিলিয়ে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার সম্পর্ক নতুন এক স্নায়ুযুদ্ধের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। এখন প্রশ্ন একটাই—মাদকবিরোধী অভিযানের নামে কি যুক্তরাষ্ট্র আবারও আরেকটি সার্বভৌম ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাতে যাচ্ছে?
সদ্য সংবাদ/এমটি



























