দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধ
সি চিন পিংয়ের পর কে? উত্তরাধিকার প্রশ্নে অনিশ্চয়তায় চীন
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এ সপ্তাহে দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বের রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে। চার দিনের এই অধিবেশনে মূল আলোচ্য বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যে চীনের ক্ষমতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলেও, আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচির বাইরে ঘুরছে আরও দুটি সংবেদনশীল প্রশ্ন—সি চিন পিং আর কতদিন ক্ষমতায় থাকবেন? আর তিনি না থাকলে চীনের নেতৃত্ব দেবেন কে?
টানা ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সি চিন পিং এখন মাও সে-তুং–এর পর সবচেয়ে প্রভাবশালী চীনা নেতা। কিন্তু তাঁর কোনো উত্তরসূরি এখনো দৃশ্যমান নয়। সির অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বের ভারসাম্য ও নীতির ধারাবাহিকতা নিয়ে দলে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ফেলো নিল থমাস বলেন, ‘সি নিশ্চয়ই জানেন উত্তরাধিকার নির্ধারণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এটি নিয়ে কথা বললেই তাঁর নিজের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।’
সি চিন পিং নিজে বিশ্বাস করেন, দেশের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে নেতৃত্ব তাঁর হাতেই থাকা জরুরি। ২০১৮ সালে সংবিধান সংশোধন করে তিনি প্রেসিডেন্টের মেয়াদসীমা বাতিল করেছেন। ফলে এখন তিনি অনির্দিষ্টকাল রাষ্ট্র, দল ও সেনাবাহিনীর শীর্ষে থাকতে পারেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সির বয়স এখন ৭২। তিনি যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন, ততই কঠিন হয়ে উঠবে এমন একজন উত্তরসূরি খুঁজে পাওয়া, যিনি যথেষ্ট তরুণ অথচ অভিজ্ঞ। বর্তমানে পার্টির শীর্ষ কমিটির সদস্যদের সবার বয়স ৬০–এর ওপরে।
ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি সান ডিয়েগোর অধ্যাপক ভিক্টর সি বলেন, ‘২০২৭ সালের পর নেতৃত্বে উন্নীত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা কর্মকর্তারাও সির উত্তরসূরি হওয়ার জন্য বয়সে অনেকটাই এগিয়ে।’
ওয়াং হসিন-হসিয়েন, তাইওয়ানের ন্যাশনাল চেংচি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক, বলেন, পার্টি ইতিমধ্যে ১৯৭০–এর দশকে জন্ম নেওয়া কিছু তরুণ কর্মকর্তাকে উন্নীত করছে। তবে সি তাঁদের প্রতিও সতর্ক, কারণ তাঁর মতে, ‘একটি বাঁধে ছোট ফাটলই ভয়াবহ ধস নামাতে পারে।’
বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, উত্তরসূরি বাছাইয়ে বিলম্বে পার্টির শীর্ষ স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে, যা চীনের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।



























