যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, একই পরিবারের ১১ জনসহ নিহত ৩৮
দীর্ঘ দু'বছরের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সাক্ষর হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও গাজায় নতুন করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এখন পর্যন্ত হামলায় অন্তত ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য উঠে আসে।
গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের বহনকারী একটি বাসে গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি সেনারা। ওই হামলায় একই পরিবারের অন্তত ১১ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে সাত শিশু ও তিন নারী ছিলেন। নিহত সবাই স্থানীয় আবু শাবান গোত্রের সদস্য। জানা গেছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর নিজেদের বাড়িঘর দেখতে এলাকায় ফিরছিলেন তারা।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল জানান, হামলার পর উদ্ধারকর্মীরা বাসের ভেতর থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করেন। তিনি বলেন, “যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজেদের ঘরবাড়ি দেখতে ফিরছিলেন, কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে।”
অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, হামলার শিকার বাসটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় নির্ধারিত ‘হলুদ লাইন’ অতিক্রম করেছিল এবং তাদের সেনাদের জন্য হুমকি তৈরি করেছিল। আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও উত্তর গাজার বহু বাসিন্দা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজেদের ঘরবাড়ির সন্ধানে ফিরছেন। তবে টানা বোমাবর্ষণ ও বিমান হামলায় গাজা নগরী প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় অনেকেই পরিচিত স্থান খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছেন।
এর আগে, গত সপ্তাহে গাজার শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে হামাস সম্প্রতি একজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। শুক্রবার রাতে মরদেহটি ইসরায়েলে পৌঁছায়।
অন্যদিকে, মিসর-সীমান্তবর্তী রাফাহ ক্রসিং এখনও বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। সীমান্ত পথে কড়াকড়ি আরোপ করায় গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বড় বাধা তৈরি হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত পুরোপুরি মানা না পর্যন্ত রাফাহ ক্রসিং খোলা হবে না।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চুক্তির শর্ত মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সদ্য সংবাদ/এমটি



























