শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

|৮ কার্তিক ১৪৩২

শীর্ষ সংবাদ:

ফিরলেন ৩০৯ জন, লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রে বাংলাদেশি
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে বিএনপিতে ফিরলেন সাত
নেতাপশ্চিম তীরে ‘ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেয়ায় বাংলাদেশের নিন্দা
নভেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: সালাহউদ্দিন আহমদ
রুশ তেলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব জ্বালানির বাজারে কতোটা পড়বে?
নসিংদীতে বাসের চাপায় অটোরিকশার চালক ও দুই যাত্রী নিহত
যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় দুর্ভিক্ষ কমেনি: ডব্লিওএইচও
নির্বাচনে মাঠে থাকবে ছয় লাখ আনসার সদস্য
উপদেষ্টারা প্রার্থী হতে পারবেনা, দাবি নাগরিক জোটের
২৪ ঘণ্টায় ৪৬৮ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সহসাই থামছে না, ট্রাম্পের গলদঘর্ম
এইচ-১বি ভিসা সংস্কারে হোয়াইট হাউসের সমর্থন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০০:২৩, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

ইয়াবা ও ককটেল বোমা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন নিজেরাই

ইয়াবা ও ককটেল বোমা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন নিজেরাই

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে ইয়াবা ও ককটেল বোমা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করতে গিয়ে তিন বন্ধু ফেঁসে গেছেন। পুলিশের তদন্তে ধরা পড়েছে, শপিং ব্যাগে ককটেল বোমা ও পকেটে ইয়াবা রেখে ফাঁসানোর পরিকল্পনা। পরে পুলিশ পরিকল্পনাকারী তিনজনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

আসামীরা হলেন, উপজেলা নলমুড়ি ইউনিয়নের ঘাটাখান গ্রামের খোকন সরদারের ছেলে আলআমিন (২৬), খোদেজঙ্গল গ্রামের আক্তার উকিলের ছেলে রুবেল (২০) এবং একই গ্রামের মোস্তফা সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার (১৯)।

ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলায়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

গোসাইরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ননি গোপাল জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আলআমিন মোবাইল ফোনে জানিয়েছিলেন, গোসাইরহাট বাজারের পট্রি ব্রিজে এক ব্যক্তির কাছে ইয়াবা ও ককটেল বোমা রয়েছে। এই সংবাদ পেয়ে এএসআই তানভির ও এএসআই সেলিমসহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালিয়ে পট্রি ব্রিজ থেকে টিটু নামের এক ব্যক্তির কাছে রাখা চারটি ককটেল বোমা ও তিনটি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। পরে টিটুকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অস্বীকার করে। টিটু উপজেলার কুচাইপট্রি ইউনিয়নের সোবাহান বেপারীর ছেলে এবং ঐদিন তার বিয়ের গাঁয়েহলুদ ছিল। পুলিশ এই ঘটনায় সন্দেহ করে।

ধারণা করা হয়, ওই ব্যক্তিকে ফাঁসানোর জন্য পকেটে ইয়াবা ও একটি ব্যাগে বোমা রাখা হতে পারে। পরে বাজার থেকে সোর্স আলআমিনকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে আলআমিন জানায়, সোহাগ ও রুবেলও ঘটনায় জড়িত। এরপর রুবেল ও সোহাগকে বাড়ি থেকে আটক করে থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ফাঁসানোর পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে।

আলআমিনের স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশ জানায়, ভোক্তভোগী টিটুর আপন ভাই স্বপন সরদার ওমান থাকেন। সেখানে একসময় তার সঙ্গে টিটু কাজ করতেন। কয়েক বছর পর টিটু তার কাজ ছেড়ে অন্য কোম্পানিতে যোগ দেন। এসব বিষয় নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে মনমালিন্য হয়। প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে স্বপন বিষয়টি তার মুঠোফোনে আলআমিন, সোহাগ ও রুবেলকে জানালে তারা ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী তারা টিটুকে ফাঁসানোর জন্য ইয়াবা ও ককটেল বোমা ক্রয় করে।

ঘটনার দিন টিটুর গাঁয়েহলুদ অনুষ্ঠান থাকায় দাশেরজঙ্গল বাজারে বিয়ের বাজার ও সেলুনে চুল কাটাতে আসছিলেন। পরে বাদামতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি অটোগাড়িতে উঠে পট্রি ব্রিজে পৌঁছালে আলআমিন, সোহাগ ও রুবেলসহ কয়েকজন তার অটোগাড়িটি আটক করে। একপর্যায়ে টিটুকে জোরপূর্বক নামিয়ে চরথাপ্পর দেয়ার চেষ্টা করে। অচেতন অবস্থায় কৌশলে ইয়াবা ট্যাবলেট তার পকেটে ঢুকিয়ে দেন এবং ককটেল বোমা সহ একটি শপিং ব্যাগ তার হাতে ধরিয়ে দেন। পরে আলআমিন পুলিশকে ফোন দিয়ে জানায় যে টিটুর কাছে ইয়াবা ও ককটেল বোমা রয়েছে। তবে পুলিশের নিবিড় তদন্তে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

টিটু মিয়া বলেন, ‘আমি গত সপ্তাহে ওমান থেকে বিয়ে করতে বাড়িতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে ইয়াবা ও বোমা রেখে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। পুলিশের নিরপেক্ষ ও নিবিড় তদন্তে প্রকৃত ঘটনা সামনে এসেছে।’

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ইয়াবা ও ককটেল বোমা উদ্ধার করে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। তদন্তে আলআমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হয়। মূলত ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে তার আপন ভাই বিদেশ থেকে ইয়াবা ও বোমা কিনতে টাকা পাঠায় এবং তাকে ফাঁসানোর জন্য পকেটে ইয়াবা ও একটি বোমা রাখে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দিয়ে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

সর্বশেষ