নাইজেরিয়ার ভয়াবহ হামলায় ৯ জন নিহত, শতাধিক অপহৃত

নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জামফারা রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়াবহ হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুকে অপহরণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও কর্মকর্তাদের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো শুক্রবারের এই ঘটনার খবর দিয়েছে।
জামফারা রাজ্যের তালাতা মাফারা জেলার জানগেবে গ্রামে এ হামলা চালানো হয়। আইনপ্রণেতা হামিসু ফারু বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি মানুষ অপহৃত হয়েছেন। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। হামলাকারীরা এখনো ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।’
জেলার প্রশাসক ইয়াহায়া ইয়ারি আবুবকর ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, হামলায় মোট ৯ জন নিহত হন এবং কমপক্ষে ১৫ জনকে অপহরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু জাকি জানান, নিহতদের মধ্যে গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিরক্ষা দলের প্রধান এবং তার পাঁচ সহযোগী রয়েছেন। বাকি তিনজন সাধারণ কৃষক। আরেক বাসিন্দা বেল্লো আহমাদু জানান, ‘মানুষ এখন কৃষিকাজে যেতে ভয় পাচ্ছে। যেকোনো সময় হামলা হতে পারে।’
২০২১ সালে জানগেবে গ্রামেই একটি বোর্ডিং স্কুল থেকে প্রায় ৩০০ ছাত্রীকে অপহরণ করেছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। পরে মুক্তিপণের মাধ্যমে তাদের মুক্ত করা হয়। সেই ঘটনার স্মৃতি এখনও এলাকাবাসীর মনে দগদগে।
আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ উসমান বলেন, ‘হামলাকারীরা দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পুরো গ্রাম ঘিরে রাখে। এরপর গণহারে অপহরণ চালায়।’ তিনি জানান, এই ঘটনার পর হাজার হাজার মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত জামফারা রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি।
উল্লেখ্য, জামফারা অঞ্চল বহুদিন ধরেই সশস্ত্র সহিংসতার কেন্দ্রস্থল। ভূমি ও সম্পদ নিয়ে কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে শুরু হওয়া বিরোধ এখন জটিল সন্ত্রাসী সংঘাতে রূপ নিয়েছে। বিশাল জঙ্গলজুড়ে বিস্তৃত সশস্ত্র গোষ্ঠীর ঘাঁটি রয়েছে জামফারা, কাদুনা, কাতসিনা ও নাইজার রাজ্যের সীমান্তে।
গত মাসেও গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী জামফারার শিনকাফি এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছিল বলে দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।
সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স, এএফপি.