ভারতের চলচ্চিত্রে অর্ধশতক, বাস কন্ডাক্টর থেকে সুপারস্টার রজনীকান্ত

বিনোদন জগতে দীর্ঘসময় টিকে থাকা যেমন কঠিন, তেমনি বিরল। কিন্তু ভারতীয় সুপারস্টার রজনীকান্তের ৫০ বছরের যাত্রা শুধু টিকে থাকা নয়, এ যেন এক নিরবচ্ছিন্ন রাজত্ব। তার সিনেমা হলকে মন্দিরে, দর্শককে ভক্তে পরিণত করেছে। খবর বিবিসি’র।
শিবাজি রাও গায়কোয়াড় নামের এক সাধারণ মানুষ ১৯৭৫ সালে ‘অপূর্ব রাগাঙ্গাল’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর পাঁচ দশকে ১৭০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি হয়ে ওঠেন ভারতীয় সিনেমার এক অনন্য প্রতীক।
গতকাল (১৪ আগস্ট) মুক্তি পেয়েছে তার নতুন ছবি ‘কুলি’, যেখানে তিনি শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ছবিটি আংশিকভাবে তার জীবনকাহিনির প্রতিফলন।
৭৪ বছর বয়সী এই তারকাকে ঘিরে ভক্তদের আবেগ সিনেমার গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে। তার নামে মন্দির, মূর্তি, এমনকি বিশেষ বিমানের প্রচারণাও হয়েছে। জাপানেও তিনি স্থানীয় তারকাদের মতোই জনপ্রিয়।
দারিদ্র্য থেকে উত্থান করে রজনীকান্ত পেয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার এবং দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মবিভূষণ।
পরিচালক ও সমালোচকরা মনে করেন, তার স্থায়ী জনপ্রিয়তার রহস্য হলো গল্প ও চরিত্র বাছাই, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও সহকর্মীদের প্রতি দায়িত্বশীলতা। তিনি ভিলেন, অ্যান্টি-হিরো থেকে শুরু করে আধ্যাত্মিক গুরু এবং রোবট পর্যন্ত নানান চরিত্রে সমানভাবে সফল হয়েছেন।
রজনীকান্ত শুধু অভিনেতা নন, ভক্তদের কাছে তিনি এক প্রতীক। সিনেমা মুক্তির দিনে ভক্তরা বাড়ি বন্ধক রাখেন, সোনা বিক্রি করেন, এমনকি সিনেমা হলে দুধ ঢেলে উৎসব করেন।
চলচ্চিত্র ঐতিহাসিকদের মতে, তামিল সিনেমার সর্বশ্রেষ্ঠ তারকারা আজ দেবতাতুল্য মর্যাদায় আসীন। রজনীকান্ত সেই ধারার শীর্ষে ভক্তদের বিশ্বাস, তিনি তাদের জীবনে স্বপ্ন ও জাদুর আলো ছড়ান।