‘যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি পেলেই বাণিজ্য চুক্তির গোপনীয়তা প্রকাশ করা হবে’

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের পর সেটির গোপনীয়তা তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, চুক্তির বিস্তারিত তথ্য উভয় দেশের সম্মতির ভিত্তিতে প্রকাশ করা হবে, যা আন্তর্জাতিক রীতি এবং তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আলোচনার সময় গোপনীয়তা বজায় রাখা স্বাভাবিক একটি বিষয়। এটি ব্যাংক, বীমা বা ব্যক্তিগত সম্পদ হস্তান্তরের মতো ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, চুক্তিতে এমন কোনো শর্ত থাকবে না, যা বাংলাদেশের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। “নিজস্ব স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলে সক্ষমতার ঘাটতি হবে, তাতে বাণিজ্য চুক্তি করে কোনো লাভ হবে না,” মন্তব্য করেন বশিরউদ্দীন। তিনি আরও বলেন, যদি চুক্তির কোনো উপাদান দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হয়, তবে সেই চুক্তি কোনোভাবেই পালনযোগ্য নয়।
তিনি স্বীকার করেন, আলোচনা চলাকালে দুর্ভাগ্যজনকভাবে চুক্তির কিছু অংশ ফাঁস হয়েছিল। তবে সেই ফাঁস হওয়া অংশে দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু ছিল না বলেও জানান। যেসব বিষয় বাংলাদেশের স্বার্থে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারত, তা থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র তোলেনি। এটি একটি একমুখী প্রস্তাব এবং ২০৩৭ সালের আগে কোনো বিমান সরবরাহ সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আগ্রহ ছিল কৃষিপণ্যে। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ বছরে ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যপণ্য আমদানি করে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কৃষিপণ্য উৎপাদক। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ তুলা, সয়াবিন, ভুট্টা এবং গমের মতো কৃষিপণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে পারে।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র নতুন বিমান কিনে না, বিমানের পরিচালন সক্ষমতা বাড়ানোও জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।