প্রতারণার জন্য এই সরকার কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে: মাহমুদুর রহমান মান্না
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, নোবেলজয়ী ড. ইউনূস বিশ্বজুড়ে পরিচিত ও সফল একজন পারফরমার হলেও দেশে এসে তিনি কিছুই করতে পারেননি। তার মতে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি জটিলতার মধ্যে পড়েছে এবং সরকার এখন প্রতারণার অভিযোগে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘রাজনীতির বর্তমান এবং ভবিষ্যতের পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মান্না বলেন, ‘ড. ইউনূস দুনিয়াজোড়া পরিচিত একজন মানুষ। তিনি ভালো পারফরমার, কিন্তু বাংলাদেশে এসে কিছুই করতে পারলেন না। পুরো দেশ এখন অচলাবস্থার মধ্যে। বিএনপি বলেছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে; আবার এনসিপিও বলেছে, সরকার তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এখন মনে হচ্ছে, এই সরকার প্রতারণার বিচারের কাঠগড়ায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে আট মাস ধরে আলোচনা চলল, কিন্তু এর ফল কোথায়? আমি যদি বলি—‘যে লাউ, সেই কদ’, তাহলে ভুল হবে না। যে ঐকমত্যের কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে তার কিছুই হয়নি।’
সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার যেন কোনো নির্দিষ্ট দলের পক্ষে না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বলেছে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন পিছিয়ে গেলেও গণভোট আগে করতে হবে। কিন্তু গণভোট আগে হোক বা নির্বাচনের দিনই হোক, রাজনৈতিক তাৎপর্যে কোনো পার্থক্য নেই।’
সাকি আরও বলেন, ‘গণভোট নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের একরোখা অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, কেউ হয় নির্বাচনের সময় পেছাতে চাচ্ছে, না হলে এই জটিলতাকে আরও গভীর করে বার্গেনিং করতে চাইছে।’
আলোচনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বিএনপির জন্ম হয়েছিল ‘হ্যাঁ’ ভোটের মাধ্যমে। এখন যদি তারা ‘না’ ভোটে অনড় থাকে, তবে দলটির পরিণতি ‘না’ ভোটেই নির্ধারিত হবে। তবে বিএনপি একটি বড় দল, তাই আমরা বলব—‘না’ ভোটের মধ্য দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক কবর রচনা করবেন না।’’
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা তরুণদের প্রতি অবমূল্যায়নের প্রবণতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ ২৫ বছরের নিচে। এই বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠীকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা না গেলে সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। এখন তরুণরা রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছে, তারা দেশের জন্য কাজ করতে আগ্রহী—এটাই আশার বিষয়।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।



























