শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

|৮ কার্তিক ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ০১:২২, ৭ অক্টোবর ২০২৫

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে তারেক রহমান

আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বিএনপি একা সরকার গঠন করবে

আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বিএনপি একা সরকার গঠন করবে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, তিনি শিগগিরই দেশে ফেরার পরিকল্পনা করছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জিতব। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থানে আমরা আছি। আমি মনে করি, আমার দেশে ফেরার সময় ঘনিয়ে এসেছে।’

সোমবার প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারকে দুর্বল অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত এবং প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস লিখেছে, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তারেক রহমানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক জরিপে বিএনপি এগিয়ে থাকা দল হিসেবে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ও নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছেন।

সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ‘ফ্যাসিস্ট দল।’ তিনি জানান, বিএনপি অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং বিশেষ করে গত বছরের ছাত্র আন্দোলন থেকে গঠিত নতুন রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে মিলে সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত।

নতুন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ক্যাম্পাস পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের রাজনীতিতে স্বাগত জানাব। তারা তরুণ, ভবিষ্যৎ তাদেরই।’

১৭ কোটি মানুষের দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কিছু দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শুধু পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভর না করে আমাজন, ই-বে ও আলিবাবার মতো অনলাইন খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহকেন্দ্র হতে পারে।’

বিদেশনীতি নিয়ে তিনি বলেন, তাঁর সরকার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতি অনুসরণ করবে, যা শেখ হাসিনার আমলের ‘একতরফা সম্পর্ক’ থেকে আলাদা হবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, নতুন বিএনপি সরকার প্রতিশোধের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে। তিনি জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রায় সাত হাজার সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে বা বহিষ্কার করা হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে কিনা—এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি তিনি। বরং তিনি বলেন, ‘যদি তারা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে আওয়ামী লীগ কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে?’

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচিত হলে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরাতে ইউনূস সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

সাক্ষাৎকারে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ২০০৮ সালে ফাঁস হওয়া এক মার্কিন কূটনৈতিক বার্তার উল্লেখ করে লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে তারেক রহমানকে “লুটেরা সরকার ও সহিংস রাজনীতির প্রতীক” বলা হয়েছিল এবং তাঁর বিরুদ্ধে “নিয়মিত ঘুষ দাবির” অভিযোগ তোলা হয়।

এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তারেক রহমান বলেন, ‘যে কোনো সরকারেরই কিছু ত্রুটি থাকতে পারে, তবে বিএনপিই বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিষ্ঠা করেছিল।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘বাংলাদেশি গণমাধ্যমে ছড়ানো ভুয়া বর্ণনাই ওই মার্কিন তারবার্তার ভিত্তি তৈরি করেছিল এবং আমার বিরুদ্ধে করা সব মামলা এখন প্রত্যাহার হয়েছে।’
 

সর্বশেষ