রুমিন ফারহানা একজন রাজনৈতিক বাঘিনি: গোলাম মাওলা রনি

বিএনপির শীর্ষ নেত্রী রুমিন ফারহানাকে রাজনৈতিক ‘বাঘিনি’ আখ্যা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তার মতে, বিএনপিতে রুমিনের মতো সাহসী ও বুদ্ধিমতী নেত্রীর সংখ্যা খুবই কম। এমনকি বিরোধী পক্ষও তার নেতৃত্বগুণ ও অবস্থানের কারণে তাকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওতে রনি বলেন, রুমিন ফারহানার পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড বিএনপির অনেক নেতার তুলনায় অধিক সম্মানজনক। তিনি রুমিনকে ‘বিউটি উইথ ব্রেইন’ হিসেবেও উল্লেখ করেন।
রনির মতে, বিএনপি রুমিনের মতো নেতৃত্বকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে না পারা বড় রাজনৈতিক ভুল। তিনি বলেন, ‘রুমিন ফারহানার বাবা ওলিহাদকে যারা চিনেন, তাদের দৃষ্টিতে বিএনপিতে তার সমকক্ষ কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাকে নিয়ে পেছনে হিংসা, কটাক্ষ বা চরিত্রহনন করা সম্ভব হলেও, সরাসরি মুখোমুখি হওয়ার সাহস রাখেন খুব কম মানুষই।’
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যদি কখনও রুমিনকে প্রশ্ন করতেন ‘তুমি কে’, তবে রুমিনও দ্বিধাহীনভাবে পাল্টা বলতেন ‘আপনি কে’। সেই জবাব দেওয়ার শক্তি তার ছিল।’
নারীর বুদ্ধিমত্তা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে প্রায়ই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় উল্লেখ করে রনি বলেন, ‘আমাদের সমাজে এখনও কোমল, নরম-সরম ধাঁচের মেয়েদেরকেই বেশি পছন্দ করা হয়। অথচ রুমিন ফারহানার মতো মেধাবী ও দৃঢ়চেতা নারীরা সেই প্রথাকে ভেঙে দেন।’
সংসদে রুমিন ফারহানার ভূমিকার প্রশংসা করে রনি বলেন, দলের কঠিন সময়ে তিনি একাই বিএনপিকে উজ্জীবিত রেখেছিলেন। তার বক্তব্য ও উপস্থিতি সংসদকে প্রাণবন্ত করে তুলত। এমনকি তিনি বিএনপিকে এমন অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন, যা শতাধিক জ্যেষ্ঠ নেতাও প্রতিদিন মিলেও করতে পারতেন না। টেলিভিশন টকশোতেও বর্তমানে বিএনপির সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ হিসেবে রুমিনকে আখ্যা দেন তিনি।
তবে রনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রুমিন ফারহানার মতো নেত্রীর প্রতি বিএনপির দৃঢ় সমর্থন স্পষ্ট নয়। বরং দলের মধ্যে ভেতরের দ্বন্দ্ব ও জেলায় জেলায় ত্যাগী নেতাদের ‘কোরবানি’ দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ‘কুমিল্লার মুরাদনগরে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে সুযোগ দেওয়ার নামে বিএনপির অনেক নেতা নিজেদের দলের লোককেই সরিয়ে দিতে চাইছে।’
রনি সতর্ক করে দেন, রুমিন ফারহানাকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলেও, এতে তার চেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে বিএনপি নিজেই। দলের ভেতরের এই নীরবতা ও আত্মঘাতী প্রবণতা অব্যাহত থাকলে শেষ পর্যন্ত দলটির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।