‘তরুণদের দক্ষতা-কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে সরকার কাজ করছে’
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপিত হয়েছে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২৫। এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকায় বিনিয়োগ ভবনে এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ)। ইউনেস্কো-ইউনিভোক ঘোষিত এবারের প্রতিপাদ্য ছিল—‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল দক্ষতার মাধ্যমে যুবদের ক্ষমতায়ন’।
অনুষ্ঠানে ‘ন্যাশনাল স্কিলস পোর্টাল’-এ ‘লাইভ জব অপরচুনিটি’ প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করা হয়। একইসঙ্গে, জাতীয় দক্ষতা প্রতিযোগিতা ২০২৫-এর চূড়ান্ত বাছাইয়ে বিজয়ী ১১ জনকে ৯টি স্কিলে পুরস্কৃত করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোসাদ্দেক খান। আলোচনায় অংশ নেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জহুরুল হক এবং ডুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওবায়দুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, তরুণদের দক্ষতা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, “তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। আমাদের জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণ, যা একটি জাতির জন্য বিরল সুযোগ।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গঠিত নতুন বিশ্বে টিকে থাকতে হলে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম জানান, এনএসডিএ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন অংশীজনকে যুক্ত করে একটি সমন্বিত দক্ষতা কাঠামো গড়ে তোলা। তিনি তরুণদের ডিজিটাল ও এআইভিত্তিক দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানান এবং সরকার, একাডেমিয়া ও শিল্প খাতের সমন্বয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন।
সভাপতির বক্তব্যে এনএসডিএ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান রেহানা পারভীন বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল প্রযুক্তি মানুষের জীবন ও শিক্ষার পদ্ধতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে। তিনি জানান, ইউনেস্কো-ইউনিভোকের তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৮৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এআই ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, অথচ এখনও ৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থী এই পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত নয়।
তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমে সংস্কার ও উদ্ভাবন অব্যাহত রাখতে হবে। এনএসডিএ প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতাসহ সর্বস্তরের দক্ষতা অর্জনের সুযোগকে সর্বজনীন করতে চায়, যাতে কোনো ধরনের বৈষম্য না থাকে।
তিনি জানান, জাতীয় দক্ষতা প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা ২০২৬ সালে চীনের সাংহাইতে অনুষ্ঠেয় ‘ওয়ার্ল্ড স্কিলস’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে এবং এনএসডিএ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিতে তাদের সহায়তা প্রদান করবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ সভার এক ঘোষণায় প্রতি বছরের ১৫ জুলাইকে ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যার মূল লক্ষ্য হলো বেকারত্ব মোকাবিলা এবং তরুণদের দক্ষ করে তুলতে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনএসডিএ-এর সদস্য (সমন্বয় ও অ্যাসেসমেন্ট) ও যুগ্মসচিব মো. আব্দুস সামাদ, সদস্য (পরিকল্পনা ও দক্ষতামান) ও যুগ্মসচিব মিনা মাসুদ উজজামান, শিল্প দক্ষতা পরিষদের প্রতিনিধিরা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য বিশিষ্টজন।



























