শনিবার, ০৯ আগস্ট ২০২৫

|২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৫৯, ১৪ জুলাই ২০২৫

জলবায়ু সম্পর্কে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

জলবায়ু সম্পর্কে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক নিজস্ব সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে ঢাকার চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘এ সিগনিফিকেন্ট স্টেপ ফরওয়ার্ড ইন ফ্লাড প্রিপেয়ার্ডনেস: দ্য অফিসিয়াল লঞ্চ অব দ্য ফ্লাড ফোরকাস্টিং অ্যান্ড ওয়ার্নিং সেন্টারস (এফএফডব্লিউসি) আপগ্রেডেড ওয়েবসাইট অ্যান্ড ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস যত বেশি আধুনিক ও স্মার্ট করা যায়, ততই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হবে। এজন্য সরকারকে এই খাতে অর্থ, মেধা ও শ্রম বিনিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি যোগাযোগ ও নেটওয়ার্কিং জোরদার করতে হবে। দুর্যোগ প্রস্তুতিকে বাস্তবিক অর্থেই শক্তিশালী করতে হবে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান বাস্তবতায় ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে হলে সতর্কবার্তা দেওয়ার মান ও দক্ষতা বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে জলবায়ু অভিযোজন সক্ষমতা বাড়াতে ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগাম তথ্য প্রদানকে আরও কার্যকর, বিস্তৃত ও ব্যাপক করতে হবে। তিনি নদীভাঙনের বিষয়টিকেও আগাম পূর্বাভাসের আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, আবহাওয়ার মতোই নদীভাঙনের ক্ষেত্রেও স্মার্ট ও আগাম পূর্বাভাস দিতে হবে, যাতে মানুষ আগে থেকেই সতর্ক হতে পারে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারে। কোন কোন অঞ্চলে মৌসুমে ভাঙন ঘটতে পারে, তা আগে থেকে জানাতে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে। বর্ষার আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরি দায়িত্বপ্রাপ্তদের হাতে সম্ভাব্য ভাঙন এলাকার একটি ম্যাপ থাকা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নদীভাঙনের মানবিক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, এই ধরনের দুর্যোগে মানুষের সবকিছু হারিয়ে যায়। তাই সম্ভাব্য ভাঙন এলাকা আগে থেকে চিহ্নিত করতে পারলে, প্রোঅ্যাকটিভ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।

উপদেষ্টা জানান, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে আবহাওয়া সংক্রান্ত সাইট-স্পেসিফিক রিয়েল টাইম ডাটা বিনিময়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সম্ভাব্য একটি সমঝোতা চুক্তির আওতায় তারা বাংলাদেশকে নির্দিষ্ট এলাকার আবহাওয়ার তথ্য সরবরাহ করতে পারে, যা আগাম সতর্কবার্তায় সহায়ক হবে।

তিনি বলেন, ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য যেন মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সহজে বুঝতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের এই ডাটা বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে তারা সংকেতের ব্যাখ্যা দিতে পারেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগণকে সময়মতো সচেতন করতে পারেন। এতে জনগণ আগেই জানতে পারবে কবে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, সরকার যেন আগাম প্রস্তুতি নিতে পারে, সেজন্য আগে থেকেই কার্যকরভাবে সতর্ক করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ‘ffwc.gov.bd’ নামের ফ্লাড ফোরকাস্টিং অ্যান্ড ওয়ার্নিং সেন্টারের আপগ্রেডেড ওয়েবসাইট এবং ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেমের উদ্বোধন করেন। নতুন এই সিস্টেমের উপর বিস্তারিত উপস্থাপনা দেন রিজিওনাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-হ্যাজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমস (রাইমস)-বাংলাদেশের কান্ট্রি আইটি লিড নাজমুল আহসান শাওন এবং আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব হাসান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক একেএম তাহমিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান। এছাড়াও হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ হাবীবুর রহমানসহ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।