জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে আইনি প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার
গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভিন্নতার কারণে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর বিভেদ অব্যাহত থাকলে জাতীয় নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়াও কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তিনি এখনো দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। তবে চলতি সপ্তাহের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হলে সরকার নিজস্ব উদ্যোগে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। সে ক্ষেত্রে আদেশ জারিতে যেন আইনি প্রতিবন্ধকতা না হয়, সেজন্য আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২৭ অক্টোবর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দুটি প্রস্তাব সরকারকে দেয়। এর পরই গণভোট ও ‘নোট অব ডিসেন্ট’ ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বিপরীত অবস্থানে যায়। ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে সাত দিনের মধ্যে দলগুলোকে ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানানো হয়, কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি নেই।
সূত্র জানায়, সরকার কমিশনের দ্বিতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়নের আদেশ দিতে পারে। এতে ২৭০ দিনের সীমা বাদ দিয়ে সংবিধান সংস্কার শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের ব্যবস্থা রাখা হতে পারে। পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব ছাড়া বাকি প্রস্তাবগুলোতে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ যুক্ত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “দলগুলো সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত না দিলে সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। এজন্য প্রস্তুতিমূলক বৈঠক চলছে।”
সরকারের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি সপ্তাহের শেষে সব দলকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করার চিন্তা করছেন। কারণ অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, এবং ডিসেম্বরের শুরুতেই তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন।
অন্যদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে রাজনৈতিক মহলে। এ বিষয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন, তবে এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।
তাহের বলেন, “আমরা সাড়ার অপেক্ষায় আছি। এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হলেও দলটি জুলাই সনদ ইস্যুতে আর আলোচনায় বসবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে এনসিপির নেতারা জানিয়েছেন, তারা গণতন্ত্র মঞ্চ, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টা চলছে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, “কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে। আমরা মনে করি, এখন সিদ্ধান্ত সরকারের হাতেই।” সূত্র: আজকের পত্রিকা



























