রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

|৩০ কার্তিক ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ১৯:৫৯, ২ অক্টোবর ২০২৫

দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
ছবি: বাসস

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্তে বিজয়া দশমী উদযাপন ও প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেবী দুর্গাকে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয়। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের অনুষ্ঠান।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মানুষের মনের অসৎ প্রবৃত্তি যেমন কাম, ক্রোধ, হিংসা ও লোভ বিসর্জন দেওয়া হলো বিজয়া দশমীর মূল উদ্দেশ্য। এদিন এই প্রবৃত্তিগুলো ত্যাগের মাধ্যমে মানুষ একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন।

দেবী আনন্দময়ীর আগমন চণ্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়। পরবর্তী পাঁচ দিন রাজধানীসহ সারাদেশে পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনা চলে, ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।

বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে ফিরে যান। আগামী বছরের শরতে আবার তিনি পৃথিবীতে আগমন করবেন। প্রতিমা বিসর্জনের সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

ঢাকের বাদ্য-যন্ত্র আর সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীতে প্রতিমা পর্যায়ক্রমে বিসর্জন করা হয়। নদীতে নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের টিম দায়িত্ব পালন করে। সড়কে পুলিশের টহলও ছিল চোখে পড়ার মতো।

দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয়। ভক্তরা ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে পলাশীর মোড়ে সমবেত হন এবং শত শত ট্রাক সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। যাত্রাপথে শহীদ মিনার, হাইকোর্ট, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার ও কোর্ট এলাকা অতিক্রম করে প্রতিমা পৌঁছায়। রাস্তায় দর্শনার্থীর ভিড় চোখে পড়ে, পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমা স্থাপন রেখে হলেও পূজায় ব্যবহৃত ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রথা অনুযায়ী বিসর্জনের পর শান্তিজল সংগ্রহ করে পরবর্তী বছরের পূজায় ব্যবহার করা হয়। রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন করা হয় এবং ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন।

এ বছর সারাদেশে ৩৩,৩৫৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৫৮টি। প্রশাসন ও পূজা কমিটি মণ্ডপগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
 

সর্বশেষ