বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

|১৫ আশ্বিন ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২৮, ১১ আগস্ট ২০২৫

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ৬০ ছাত্রনেতার বিবৃতি

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ৬০ ছাত্রনেতার বিবৃতি
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রকে সাধারণ জনগণের সঙ্গে প্রতারণামূলক প্রহসন উল্লেখ করে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ৬০ ছাত্রনেতা  এই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা দাবি জানিয়েছে, সব শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে জনগণকে অংশীদার করে নতুন ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করার।

রোববার (১০ আগস্ট) রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান ছাত্রনেতারা। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাজারো শহিদ ও আহত ভাইবোনের রক্তাক্ত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এবং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার থেকে মুক্ত করেছে। জুলাই আন্দোলন জনগণ বিদ্যমান শোষণ-নিপীড়নমূলক পুলিশ, আদালত, আইন-সংবিধান তথা পুরোনো ব্যবস্থার দ্বারা চূড়ান্তভাবে অস্বীকার করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান এই অঞ্চলের পূর্ববর্তী সব গণঅভ্যুত্থানকে ছাড়িয়ে সর্বাত্মক রূপ ধারণ করেছে। চব্বিশের জুলাই, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মতো সামরিক শাসন মেনে নেয়নি, আবার ১৯৯০ সালের মতো শুধু ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরশাসকের পতনকেই লক্ষ্য করেনি। বরং রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা থেকে গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের বৈপ্লবিক চেতনাকে উজ্জীবিত করেছে। এ প্রক্রিয়ায় জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভূমিকায় আসে ছাত্রনেতারা, যাদের আহ্বানে ঐক্যবদ্ধ হয় জনগণ।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ছাত্রনেতারা প্রথমেই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব দল ও সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে নতুন যাত্রা শুরুর লক্ষ্যে জাতীয় সরকারের প্রস্তাব দেন। কিন্তু পুরনো রাজনৈতিক কাঠামোর সুবিধাভোগী দলগুলোর একটি বড় অংশ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের জনআকাঙ্ক্ষা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। ফলে নির্দলীয় এনজিও-সমর্থিত অ্যাক্টিভিস্ট, বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের নেতৃত্ব নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন ছাত্রনেতারা।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় দুটি প্রতিবিপ্লবী ঘটনার উল্লেখ করা হয়। প্রথমত, পুরনো শোষণ-নিপীড়নমূলক সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র গণঅভ্যুত্থানকে সমর্থনের ভান করে আলোচনার টেবিলে স্থান করে নেয় এবং নিজেদের এজেন্ডা অনুযায়ী সরকার গঠনে প্রভাব ফেলে। দ্বিতীয়ত, আমলাতন্ত্রের প্রতারণা, সুশীল সমাজের আপোষকামিতা ও সাহসের অভাবে ছাত্রনেতারা পুরনো সংবিধান, পুলিশ, আদালতসহ বিদ্যমান শোষণমূলক কাঠামো মেনে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন। এর ফলে গণঅভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের মূল আকাঙ্ক্ষা শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয়।

এ বিবৃতিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষার্থী সই করেছেন।

সর্বশেষ